Paddy

সমবায়কে ধান বিক্রি, ছ’মাসেও টাকা পাননি চাষি

ছ’মাস কেটে গেলেও ব্যাঙ্কে টাকা ঢোকেনি বলে অভিযোগ।

Advertisement

অমিত মণ্ডল

মদনপুর শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২১ ০৬:০১
Share:

প্রতীকী ছবি।

সরকারের ঘরে ধান বিক্রি করে বাজারদরের থেকে কিছু বেশি পাওয়া যাবে বলে আশায় ছিল ওঁদের। গত জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করেছিলেন মদনপুরের জীবননগরের চাষিরা। কিন্তু ছ’মাস কেটে গেলেও তাঁদের ব্যাঙ্কে টাকা ঢোকেনি বলে অভিযোগ।

Advertisement

চাষিদের আক্ষেপ, সপ্তাহখানেকের মধ্যে তাঁদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকে যাবে বলে ধান কিনেছিল স্থানীয় বহুমুখী সংঘ প্রাথমিক কোঅপারেটিভ সোসাইটি। বরুণ মণ্ডল নামে এক চাষি প্রায় ১৮ কুইন্টাল ধান বিক্রি করেছিলেন। কিন্ত এখনও পর্যন্ত তিনি একটি টাকাও পাননি। আর এক চাষি দিলীপ পাল কিছু টাকা পেয়েছেন, কিছু টাকা বাকি রয়েছে। তিনি বলেন, “বাকি টাকা আজ দেবে কাল দেবে বলে ঘোরাচ্ছে ওই সোসাইটি।” অন্য বছরের তুলনায় এই বছর করোনাকালের টানাটানি চলায় চাষিরা বেশি সমস্যায় পড়েছেন। যাদের হয়ে ওই সমবায়টি ধান কিনেছিল, সেই অত্যাবশ্যক পণ্য সরবরাহ নিগমের (ইসিএসসি) আধিকারিক অনিমেষ সরকার জানান, তাঁরা যে পরিমাণ ধান কিনেছিলেন ওই সমবায়ের মাধ্যমে, তার দরুণ প্রত্যেক চাষিকেই তিন থেকে ১০ দিনের মধ্যে টাকা দিয়ে দেওয়া হয়েছে।” জেলা খাদ্য দফতরের এক আধিকারিকেরও দাবি, যে সংস্থার মাধ্যমে তাঁরা ধান কেনেন সেই সংস্থার মাধ্যমে চাষিদের তিন থেকে সাত দিনের মধ্যে টাকা দিয়ে দেওয়া হয়।

তা হলে ছ’মাসেও টাকা না পাওয়ার অভিযোগ উঠছে কেন?

Advertisement

ওই সমবায়ের সভাপতি শম্পা মজুমদারের দাবি, বরুণ মণ্ডলের কাগজপত্র ভুল থাকায় প্রথমে নাম রেজিস্ট্রেশন হয়নি। পরে রেজিস্ট্রেশন করা হয়। তা ছাড়া এক অ্যাকাউন্ট থেকে ১৮ কুইন্টালের বেশি ধান কেনার নিয়ম নেই। তার সত্ত্বেও কিছু চাষি জোর করে বেশি ধান তাঁদের কাছে বিক্রি করেছেন। সেই অতিরিক্ত পরিমাণ ধানের টাকাই বাকি রয়েছে।

কিন্তু চাষিদের দাবি, তাঁরা জোর করে বেশি ধান বিক্রি করেননি। শুধু জীবননগর নয়, মদনপুরেরই জঙ্গল গ্রামের কিছু কিছু চাষির ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। চাষিদের একাংশের অভিযোগ, বাজার দরের থেকে বেশি টাকা পাওয়ার আশায় ওই সমবায়ের কাছে চাষিরা ছাড়াও ফড়ে বা কারবারিরা ধান বিক্রি করেছিলেন। সমিতির হয়ে যাঁরা ধান কিনছিলেন, তাঁদের একাংশ এর জন্য ওই সব কারবারির কাছ থেকে টাকাও নিয়েছেন। তাই আগে তাঁদের টাকা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি রয়েছে চাষিদের টাকা। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেন শম্পা।

এ প্রসঙ্গে শম্পা বলেন, “এই বছর আমরা ভুল করে ২৭০ কুইন্টাল ধান বেশি কিনে ফেলেছি।” স্থানীয় সূত্রের দাবি, এই সব অতিরিক্ত কেনা ধান পড়ে রয়েছে চাকদহের কোনও ধানকলে। যে সব চাষির ধান পড়ে রয়েছে, তাঁদের মধ্যে জীবননগরের এক জনের স্ত্রী মারা গেলে টাকার অভাবে তাঁকে গরু বিক্রি করে শ্রাদ্ধ করতে হয়েছে। তবে শম্পা বলেন, “লকডাউন এবং ভোটের কারণে নতুন করে ধান কেনার অর্ডার হতে দেরি হচ্ছে। নতুন অর্ডার হলেই চাষিরা
টাকা পাবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন