হরিণঘাটায় হাতেনাতে পাকড়াও পাঁচ দুষ্কৃতী

কের পর এক ডাকাতির ঘটনায় আতঙ্ক ছড়াচ্ছিলই। আর তার ফলও ভুগতে হচ্ছিল পুলিশকে। কখনও কখনও জনরোষের শিকার হচ্ছিলেন নির্দোষরাও। তবে সোমবারের হরিণঘাটা থানা এলাকার দু’টি ঘটনা ছাপিয়ে গেল আগের সব কিছুকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কল্যাণী শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:৪২
Share:

ক্ষুব্ধ লোকজনের তাণ্ডব। নিজস্ব চিত্র।

একের পর এক ডাকাতির ঘটনায় আতঙ্ক ছড়াচ্ছিলই। আর তার ফলও ভুগতে হচ্ছিল পুলিশকে। কখনও কখনও জনরোষের শিকার হচ্ছিলেন নির্দোষরাও। তবে সোমবারের হরিণঘাটা থানা এলাকার দু’টি ঘটনা ছাপিয়ে গেল আগের সব কিছুকে।

Advertisement

প্রথমে জনতার হাতে আটক দুষ্কৃতীদের ছাড়াতে গিয়ে বেগ পেতে হল পুলিশকে। দুষ্কৃতীদের জনতার হাতে তুলে দেওয়ার দাবিতে অবরুদ্ধ হল জাতীয় সড়ক। পরে আরও তিন দুষ্কৃতীকে জনরোষ থেকে বাঁচাতে গিয়ে প্রবল প্রতিরোধের মুখে পড়তে হল পুলিশকে। জনতার ছোড়া ইটের আঘাতে জখম হলেন হরিণঘাটা থানার আইসি-সহ মোট ছয় পুলিশ কর্মী। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ দুষ্কৃতীরা পালানোর সময় গুলি ছোড়ে। পাল্টা জনরোষে পোড়ে দুষ্কৃতীদের একটি বাইক। এ দিনের ঘটনায় পুলিশ পাঁচ দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে।

ঠিক কী ঘটেছিল সোমবার?

Advertisement

এ দিন দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ বিরহির আয়েশপুরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে একটি কলা বাগানে দু’টি বাইকে করে পাঁচ যুবক আসে। অপরিচিত ওই যুবকদের তাড়া করে এলাকার বাসিন্দারা। অভিযোগ, পালানোর সময় তারা এক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। একটি বাইকে করে তিন যুবক পালিয়ে গেলেও বাকি দু’জনকে ধরে ফেলে স্থানীয় লোকজন। শুরু হয় গণপ্রহার। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। দু’জনকে উদ্ধার করে তারা। কিন্তু দুষ্কৃতীদের তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবিতে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন বাসিন্দারা। অবরোধ তুলতে আধ ঘণ্টা লেগে যায় পুলিশের। এর জেরে রাস্তায় ব্যাপক যানজট তৈরি হয়।

এ দিকের পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হতেই ফের খবর যায় পুলিশের কাছে। এ বার আয়েশপুরের কাছেই সোনাখালির পাঁচপুকুরিয়া। দুপুর দু’টো নাগাদ একটি বাইকে অপরিচিত তিন যুবককে দেখে পথ আটকায় এলাকার লোকজন। গ্রামবাসীদের জেরার মুখে তারা অসংলগ্ন কথা বলতে শুরু করলেই শুরু হয় মারধর। সন্দেহভাজনদের একটি ঘরে বন্ধ করে দেন তাঁরা। পরে জানা যায়, এই তিন জনই আয়েশপুর থেকে কোনও মতে পালিয়ে আসা ওই তিন মোটরবাইক-আরোহী।

খবর পেয়ে পুলিশ গ্রামে যেতেই তাদের তাড়া করে জনতা। এ বার আর পুলিশের হাতে ছাড়া হবে না কিছুতেই। পালিয়ে আসে পুলিশ। এর পর র‌্যাফ নিয়ে ঘটনাস্থলে যায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। তাঁদের লক্ষ করে ইট-পাথর ছুড়তে শুরু করে জনতা। ইটের ঘায়ে জখম হন হরিণঘাটা থানার আইসি সুজিত ভট্টাচার্য-সহ ছয় পুলিশ কর্মী। কোনও রকমে তাঁদের উদ্ধার করে হরিণঘাটা থানায় আনা হয়। জখম পুলিশ কর্মীদের পরে হরিণঘাটা গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে কল্যাণী জেএনএম মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত পাঁচ জনই দুষ্কৃতী। তাদের মধ্যে অমিত দুর্লভ, আজহার শেখ, সাজ্জাক মণ্ডল, রনি সাহা, মইবুল শেখ কৃষ্ণনগর এলাকারই বাসিন্দা। সাজ্জাক এবং অমিতের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলাও রয়েছে। তাদের কাছ থেকে একটি ওয়ান শটার ও কয়েক রাউন্ড গুলি পাওয়া গিয়েছে। পুলিশের জেরার মুখে তারা জানিয়েছে, জাতীয় সড়কে ছিনতাইয়ের জন্যই তারা ওই কলাবাগানে জড়ো হয়েছিল। কিন্তু উদ্দেশ্য সফল হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন