ধর্ষণের মামলায় বেকসুর খালাস পেলেন প্রাক্তন বিচারক শ্যামল সেনগুপ্ত। সোমবার রানাঘাটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক রূপঞ্জনা চক্রবর্তী এই রায় দেন। শ্যামলবাবু এত দিন জামিনে ছিলেন। রায়ের কথা শুনে অভিযোগকারী মহিলার প্রতিক্রিয়া, ‘‘ঠিক বিচার হয়নি। ক্ষমতার অপব্যবহার করা হয়েছে।’’ আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৪ সালের ১১ জুন রানাঘাট থানায় শ্যামলবাবুর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন ওই মহিলা। সেই সময় শ্যামলবাবু রানাঘাটে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক, ফাস্ট ট্রাক (প্রথম) কোর্টের বিচারক ছিলেন। তাঁর আদালতে তখন ধানতলায় কন্যাযাত্রীর বাসে ডাকাতি, ধর্ষণ ও খুনের মামলার বিচার চলছিল। বছর দু’য়েক আগে তিনি অবসর নিয়েছেন।
প্রাক্তন বিচারকের সঙ্গে অভিযোগকারিনীর পরিচয় হয় কী করে? পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বামীর সঙ্গে অভিযোগকারিনীর বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছিল। তখন শ্যামলবাবু রানাঘাট মহকুমার আইনি পরিষেবা সমিতির চেয়ারম্যান ছিলেন। ওই মহিলার দাবি, বিনা খরচে আইনি পরিষেবা নিয়ে কথা বলতে শ্যামলবাবুর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। সেই সূত্রেই বিচারকের সঙ্গে তাঁর পরিচয় বলে আদালতে দাবি করেন তিনি। এ দিনও তিনি বলেন, ‘‘আইনি লড়াইয়ের জন্য বিচারকের কাছে যেতে হত। তাঁর কাছে আমার বাড়ির ঠিকানাও ছিল।’’
শ্যামলবাবুর আইনজীবী দিলীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ না থাকায় শ্যামলবাবুকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।’’ তাঁর দাবি, অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ অভিযোগকারিনীকে হাসপাতালে মেডিক্যাল টেস্টের জন্য পাঠিয়েছিল। কিন্তু, তিনি ইচ্ছে করে টেস্ট করাননি। দিলীপবাবুর অভিযোগ, ‘‘টেস্ট করালে প্রকৃত সত্যি বেরিয়ে পড়বে, তা বুঝেই এমনটা করা হয়।’’ সরকার পক্ষের আইনজীবী অপূর্ব ভদ্র এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন।