শেহনাজ খুনে কল লিস্ট এবং হোয়াটস অ্যাপের কথা চালাচালির সূত্রেই ধৃত সহপাঠী

সাগরদিঘির মনিগ্রাম পঞ্চায়েতের সাহেবনগর গ্রামে শুক্রবার রাতে  বাড়ির শৌচাগারের পাশে গলার নলি কাটা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল ওই ছাত্রীকে। তদন্তে নেমে সে রাতেই পুলিশ জানিয়েছিল, ওই ঘটনার পিছনে কোনও ‘পুরনো সম্পর্কের’ জের থাকতে পারে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সাগরদিঘি শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:০৬
Share:

শেহনাজ সুলতানা

কলেজ ছাত্রী শেহনাজ সুলতানা খুনে শেষ পর্যন্ত গ্রেফতার করা হল তারই এক পুরনো সহপাঠীকে। যে খুনের কিনারায় সবচেয়ে বড় ভূমিকা নিল মোবাইলের কল লিস্ট এবং হোয়াটস অ্যাপের কথা চালাচালির সূত্র।

Advertisement

সাগরদিঘির মনিগ্রাম পঞ্চায়েতের সাহেবনগর গ্রামে শুক্রবার রাতে বাড়ির শৌচাগারের পাশে গলার নলি কাটা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল ওই ছাত্রীকে। তদন্তে নেমে সে রাতেই পুলিশ জানিয়েছিল, ওই ঘটনার পিছনে কোনও ‘পুরনো সম্পর্কের’ জের থাকতে পারে।

এর পরেই শেহনাজের পরিচিত বেশ কয়েকজন যুবককে জেরা শুরু করে পুলিশ। সোমবার রাতে তাদেরই অন্যতম বছর কুড়ির আতারুল শেখকে গ্রেফতার করা হয়। জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রবিবার থেকেই সন্দেহের তালিকায় অন্যদের সঙ্গে আতারুলকেও রাখা হয়েছিল। লাগাতার জেরায় সোমবার রাতে সে ভেঙে পড়ে। শেহনাজকে খুনের কথা কবুল করে নেয় সে। তার কথামত বাড়ি থেকেই উদ্ধার করা হয়েছে ওই খুনে ব্যবহৃত ছুরিটিও।’’

Advertisement


ধৃত আতারুল শেখ। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়

মঙ্গলবার ধৃতকে জঙ্গিপুর মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়। সরকারি আইনজীবী রাতুল বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বিচারক অমর কিশোর মাহাতো তাকে ৫ দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, হাইস্কুলে তরুণী শেহনাজের সঙ্গে একই ক্লাসে পড়ত আতারুল। তখনই তাদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আতারুল পড়াশুনো ছেড়ে দিলেও শেহনাজ পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এবারই জঙ্গিপুর কলেজে বাংলায় অনার্স নিয়ে ভর্তি হয় শেহনাজ। আর তারপর থেকেই আতারুলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করে সে বলে পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশের কাছে আতারুল জানায়, গত তিন মাস ধরে তার সঙ্গে কোনও যোগাযোগ রাখছিল না শেহনাজ। এমনকি ফোন করলেও কল কেটে দিচ্ছিল। উত্তর দিচ্ছিল না মেসেজেরও। আর তা থেকেই আতারুল নিশ্চিত হয় শেহনাজের সঙ্গে অন্য-সম্পর্ক গড়ে ওঠার ব্যাপারে।

শুক্রবার রাত পৌনে ১১ টা নাগাদ শেহনাজের বাড়ির পাশে যায় আতারুল। সঙ্গে নেয় নিজেদের বাড়ির কোরবানি দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত ধারালো ছুরিটিও। মোবাইলে সাধারণ মেসেজ পাঠালে শেহনাজ যে তার সঙ্গে দেখা করবে না তা জানত আতারুল। তাই রাতেই মেসেজে জানায়, সে বাড়ির বাইরে অপেক্ষা করছে। শেহনাজ যেন ঘর থেকে বেরিয়ে আসে। না এলে তার বাড়ির পাশেই আত্মহত্যা করবে সে। শেহনাজকে তার মরা মুখ দেখতে হবে তাই নয়, তার বাড়ির সবকে ‘জেলে ঢোকানোর’ও ব্যবস্থা করে যাবে সে। এতেই ভয় পেয়ে শেহনাজ বেরিয়ে আসে। শেহনাজ সম্পর্ক রাখতে চায় না, তা স্পষ্ট করতেই পকেট থেকে ধারালো ছুরি বের করে আতারুল তাকে জাপটে ধরে টেনে নিয়ে যায় পাশের গলির মধ্যে। মাটিতে ফেলে শেহনাজের গলায় ছুরি টেনে দেয় ছুরি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন