সোনাপট্টির সরু গলিতে দিনভর জ্বলে সিলিন্ডার

আজ সেই রাস্তায় পাশাপশি দু’টো টোটো যেতে অসুবিধা হয়।’’ কারণটা ধরিয়ে দিচ্ছেন নিজেই, ‘‘ধরুন এ বাজারে আগুন লাগল। না ঢুকবে দমকলের গাড়ি না আছে কাছাকাছি কোনও জলা। পুড়ে মরতে হবে ভাই!’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৪৮
Share:

সোনাপট্টি বাজার। নিজস্ব চিত্র

বহরমপুরের মণীন্দ্র রোড ও দৈহাট্টার রাস্তার মোড়ে শহরের সুপ্রাচীন সোনাপট্টি। পট্টির লাগোয়া হাড়িহাট্টা লেন। সেখানেই ঢাউস মুদিখানা উত্তম ভকতের। গলি তস্য গলির ভেতরে সাকুল্যে ৩ ফুট চওড়া রাস্তার উপর দোকান, উত্তম বলেন, ‘‘বুঝতে পারছেন, যে রাস্তা দিয়ে একদা নবাবের সেনাবাহিনী গিয়েছিল, সেই নবাবি পথ কতটা চওড়া ছিল? আর আজ সেই রাস্তায় পাশাপশি দু’টো টোটো যেতে অসুবিধা হয়।’’ কারণটা ধরিয়ে দিচ্ছেন নিজেই, ‘‘ধরুন এ বাজারে আগুন লাগল। না ঢুকবে দমকলের গাড়ি না আছে কাছাকাছি কোনও জলা। পুড়ে মরতে হবে ভাই!’’

Advertisement

হাঁড়িহট্টা লেনের সংকীর্ণ গলির ভিতরে জতুগৃহের মতো নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের বিশাল পাইকারি বাজার, ডাঁয়ে-বাঁয়ে গুদাম ঘর। সেই গলির ভিতরে মাল বহনের জন্য দোকান ও গুদামঘরের সামনে দিন ভ’র দাঁড়িয়ে থাকে রিকশা ভ্যান। সেই সব দোকান ও গুদাম ঘরের ভিতর অগ্নিনির্বাপনর ব্যবস্থা নেই।

ব্যবসায়ী সঞ্জয় ভকত বলেন, ‘‘হাঁড়িহাট্টার পাশে ভাগীরথী আছে, কিন্তু পাশের সোনাপট্টির বেলা? সেখানে তো এমন সব গলি আছে, যেখানে পাশাপাশি দু’টো মানুষই হাঁটতে পারে না। সোনাপট্টিতে ভোর থেকে রাত পর্যন্ত অন্তত ৫০০ সোনার কারখানায় কিংবা দোকানে ৫০০টি গ্যাসের সিলিন্ডার জ্বলে।’’ আশঙ্কার কথা মানছেন ‘বঙ্গীয় স্বর্ণশল্পী সমিতি’র মুর্শিদাবাদ শাখার সভাপতি গঙ্গা বসাক। তিনি বলেন, ‘‘শহরের খাগড়া এলাকার সোনপট্টি খুবই প্রাচীন বাজার। ফলে রাস্তাঘাট খুবই সরু।’’ ওই সব প্রাচীন বাজারগুলির ভিতরের চেহারাটা জানেন দমকলের কর্মীরা। তাঁরা জানান, আগুন লাগলে কি হবে, তা না ভেবে বরং আগুন যাতে না লাগে, সে ভাবে একটু সতর্কতা নিলে ভাল হয় না! মুর্শিদাবাদ জেলা চেম্বার অব কমার্সের যুগ্ম সম্পাদক কল্যাণ দাস বলেন, ‘‘এই অবস্থা থেকে রেহাই পেতে পুরসভা ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে বহরমপুরের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মালিক সমিতি ও প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দফতরকে নিয়ে বসে বৈঠক করা খুব জরুরি।’’

Advertisement

পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য বলেন, ‘‘সোনাপট্টি ও হাঁড়িহাট্টা লেনের বাজার দুটো ব্যক্তি মালিকানার। পুরসভার হাতে ওই বাজার হস্তান্তর করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা রাজি হননি।’’ তবে প্রশাসনের বিভিন্ন দফতর ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মালিক সমিতির কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে

তিনি জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন