কলেজে কলেজে পতাকা এবিভিপির

বিদ্যাসাগর কলেজের টিএমসিপি নেতা সুজিত সাহা বলেন, “শনিবার বহিরাগত নিয়ে কলেজে ঢুকে জোর করে নিজেদের পতাকা টাঙিয়ে দিয়েছে এবিভিপি। আমাদের পতাকা, মুখ্যমন্ত্রীর ছবি ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছে। এভাবে ওরা নবদ্বীপকে অশান্ত করতে চাইছে।”

Advertisement

সম্রাট চন্দ

শান্তিপুর শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৯ ১২:২২
Share:

নিজস্ব চিত্র

বগুলার পরে এবার নবদ্বীপ এবং মাজদিয়া। শনিবার কলেজে ঢুকে নিজেদের পতাকা টাঙিয়ে দিল এবিভিপি। নবদ্বীপের বিদ্যাসাগর কলেজে এবিভিপির সদস্যরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি এবং টিএমসিপির পতাকা ছিঁড়ে দিয়েছে বলেও এভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

বিদ্যাসাগর কলেজের টিএমসিপি নেতা সুজিত সাহা বলেন, “শনিবার বহিরাগত নিয়ে কলেজে ঢুকে জোর করে নিজেদের পতাকা টাঙিয়ে দিয়েছে এবিভিপি। আমাদের পতাকা, মুখ্যমন্ত্রীর ছবি ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছে। এভাবে ওরা নবদ্বীপকে অশান্ত করতে চাইছে।” তবে অভিযোগ অস্বীকার করে এবিভিপির নবদ্বীপ নগর প্রমুখ শুভঙ্কর হালদার বলেন, “আমাদের কর্মীদের উপর দীর্ঘদিন ধরে অত্যাচার করেছে টিএমসিপি। যা ছিল তা মানুষের আবেগ। কোনও সন্ত্রাস করিনি।” এ দিন এবিভিপির পতাকা টাঙানো হয়েছে মাজদিয়ার সুধীরঞ্জন লাহিড়ী মহাবিদ্যালয়েও। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের মতে, লোকসভা ভোটে জনসমর্থন এনডিএ-র দিকে ঝুঁকতেই জেলার কলেজগুলির রাশ নিজেদের হাতে নেওয়ার চেষ্টা শুরু করেছে এবিভিপি। রানাঘাট কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী জয়ী হওয়ার পর শুক্রবার বগুলার শ্রীকৃষ্ণ কলেজে গিয়ে এবিভিপির পতাকা টাঙিয়ে দেন সংগঠনের কর্মীরা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি সংবলিত বিশাল ফ্লেক্সও টাঙানো হয়।

তবে রাজনীতির কারবারিদের মতে, ক্ষমতার হাতবদলের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের রাশ হাতে নেওয়ার এই প্রবণতা নতুন নয়। বাম সরকার যখন মধ্য গগনে, তখন জেলার নানা কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে একচ্ছত্র দাপট ছিল এসএফআইয়ের। সেই সময় এসএফআইয়ের সঙ্গে লড়াই ছিল ছাত্র পরিষদের। তৃণমূল প্রতিষ্ঠার পরে সেই লড়াই থেকে অবশ্য অনেকটাই পিছনে সরে যায় ছাত্র পরিষদ। বরং সেই জায়গা নিয়ে নেয় টিএমসিপি। বছর দশেক আগে থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে যায় টিএমসিপি। রাজ্যে তৃণমূলের শাসন যত পোক্ত হয়েছে ছাত্র সংগঠনের দাপটও বেড়েছে। তবে ছাত্র সংসদের নির্বাচন না হওয়ায় এই মুহূর্তে কোনও কলেজেই ছাত্র ইউনিয়ন নেই। তবে নানা দলের ইউনিট রয়ে গিয়েছে।

Advertisement

সাম্প্রতিককালে জেলায় কিছু জায়গায় এবিভিপির অস্তিত্বও টের পাওয়া যাচ্ছে। বছর খানেক ধরে আসাননগরের কলেজে ছাত্র সংসদের দখল নিয়ে এবিভিপির সঙ্গে টিএমসিপির ঝামেলাও হয়েছে একাধিকবার। এবার বগুলা, নবদ্বীপ, মাজদিয়ায় একের পর এক কলেজের ঘটনাই দেখিয়ে দিচ্ছে, রাশ হাতে নিতে ঝাঁপাচ্ছে এবিভিপি। এবিভিপির জেলা প্রমুখ আশিস বিশ্বাস বলেন, “এই নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী শক্তির উত্থান হওয়ায় ছাত্রছাত্রীরা আরও বেশি করে এগিয়ে আসছেন। যেমন বগুলায় এসেছেন।” জেলা টিএমসিপির সভাপতি সৌরিক মুখোপাধ্যায় বলেন, “একটা গৈরিকীকরণের চেষ্টা চলছে। আমরা নিন্দা করছি বগুলার ঘটনার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন