সচিন-ভক্ত হিসেবে দুনিয়া তাঁকে চেনে। বিহারের মজফ্ফরপুর থেকে নবদ্বীপে এসে সচিন রমেশ তেন্ডুলকরের জন্মদিনের উপহার হিসেবে শস্য-মশলায় গড়া গণেশের প্রতিকৃতি নিয়ে গেলেন সেই সুধীরকুমার গৌতম।
যোগাযোগের সূত্র নবদ্বীপেরই খেলাপাগল অশোক চক্রবর্তী। ইডেনে খেলা থাকলেই ‘বডি পেন্টিং’ করে মাঠে গিয়ে হাজির হন তিনি। মশলার প্রতিকৃতি গড়তেও ওস্তাদ। ইডেনেই তাঁর সঙ্গে আলাপ সুধীরের। অশোক বলেন, “কয়েক দিন আগে সুধীর ফোন করে বললেন, সচিন স্যারের জন্মদিনে দেওয়ার জন্য একটু অন্য রকমের উপহার খুঁজছেন। আমার সচিন-ভক্ত বন্ধু শঙ্কর পালের সঙ্গে আমি একটা উপহারের পরিকল্পনা করেইছিলাম। আইপিএল চলাকালীন সচিন ইডেনে এলে তাঁর হাতে দেব ভেবেছিলাম।” সুধীরের ফোন পেয়ে তাঁরা ঠিক করে ফেলেন, জন্মদিনেই সেই উপহার পাঠাবেন। সুধীর জানান, তিনি নিজেই আসবেন তা নিতে। টানা ন’দিন রাত জেগে নানা মশলা দিয়ে দু’জনে তৈরি করে ফেলেন আড়াই ফুট লম্বা আড়াই ফুট চওড়া একটি প্রতিকৃতি। গণপতি বাপ্পা আশীর্বাদ করছেন পঁয়তাল্লিশ ছোঁয়া সচিনকে। মুসুর, কলাইয়ের ডাল, সাদা সরষে, তেজপাতা, এলাচ, গোলমরিচ, রাজমায় তৈরি হয়েছে সেই মূর্তি।
বুধবার বিকেলে সুধীর আসেন নবদ্বীপে। সচিন ভক্তদের তাঁর সঙ্গে ছবি তোলার হিড়িকে কিছুক্ষণের জন্য পোড়ামাতলা মোড়ে যানজট পাকিয়ে যায়। একটা প্রতিকৃতি নিতে এত দূর এলেন? সুধীর বলেন, “সচিন স্যারের খেলা দেখার জন্য বাড়ি থেকে সাইকেলে সাড়ে পাঁচশো কিলোমিটার দূরে জামশেদপুর গিয়েছিলাম। সেটা ২০০২ সাল, তখন আমি সবে স্কুল থেকে বেরিয়েছি।” পরের বছর মজফ্ফরপুর থেকে সাইকেলেই প্রায় ২৪০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে তিনি পৌঁছন মুম্বই। ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাঁকেই সচিন হোটেলে ডেকে তাঁর সঙ্গে আলাপ করেন। সচিনভক্ত হিসেবে পৃথিবীর বহু ক্রিকেট মাঠেই হাজির হয়েছেন সুধীর।
বৃহস্পতিবারের বারবেলা। সুধীর গৌতমকে হাওড়া পৌঁছে দেওয়ার জন্য গাড়ি নিয়ে হাজির অশোক। প্রতিকৃতিতে শেষ ছোঁয়া দিতে-দিতে শঙ্কর বলছেন , “২৪ এপ্রিল, মঙ্গলবার সচিন স্যারের জন্মদিনে মুম্বইয়ে এটা তাঁর হাতে পৌঁছে যাবে — ভাবতেই দারুণ লাগছে।” নিজস্ব চিত্র