যুবক খুনে ধৃত প্রেমিকা

নিহত যুবকের নাম রাজেশ রায় (‌২৫)।‌ তিনি পেশায় দিনমজুর। তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগে প্রেমিকা প্রিয়ঙ্কা ঘোষ, তাঁর বাবা প্রভাস ঘোষ ও মা মনা ঘোষকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হোগলবেড়িয়া  শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৩৯
Share:

শোকে ভেঙে পড়েছেন মা। ইনসেটে, রাজেশ রায়। নিজস্ব চিত্র

অনেকটা সিনেমা বা উপন্যাসের মতো দিনমজুর পরিবারের ছেলে ও সচ্ছল পরিবারের মেয়ে পরস্পরকে ভালবেসেছিল। কিন্তু অসম আর্থিক অবস্থান তৈরি করেছিল পারিবারিক প্রতিরোধ। আর্থিক বৈষম্যের কারণেই যুবকটিকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে প্রেমিকার বাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে হোগলবেড়িয়ার গোপালনগর গ্রামের কালীতলাপাড়ায়।

Advertisement

নিহত যুবকের নাম রাজেশ রায় (‌২৫)।‌ তিনি পেশায় দিনমজুর। তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগে প্রেমিকা প্রিয়ঙ্কা ঘোষ, তাঁর বাবা প্রভাস ঘোষ ও মা মনা ঘোষকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রাজেশের বাবা রঞ্জিত রায় প্রিয়ঙ্কার বাবা প্রভাস ঘোষ, দাদা পীযূষ ঘোষ, কাকা সুভাষ ঘোষ, অমর ঘোষ-সহ মোট আট জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। ধৃত তিন জন ছাড়া বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে। রাজেশের পরিবার একটি ছোট্ট চালা ঘরে কোনওরকমে বসবাস করত। একই গ্রামের প্রিয়ঙ্কার পরিবার আর্থিকভাবে অনেক সচ্ছল। মাস তিনেক আগে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সূত্রপাত। প্রিয়ঙ্কার বাড়ি থেকে এই ঘটনা জানার পর প্রবল আপত্তি ওঠে।

রাজেশের মা ভক্তিলতা রায় বলেন, “সোমবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ পাড়ার এক জন এসে রাজেশের ফোন নম্বর নিয়ে যায়। কিছু ক্ষণ বাদে ছেলে বাড়ি ফেরে। এরই মধ্যে একটা ফোন আসে এবং ছেলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। এর পর আর সে আর ফেরেনি।”

Advertisement

তিনি আরও দাবি করেন, রাত ন’টা নাগাদ প্রিয়ঙ্কার দাদা পীযূষ ঘোষ ও বাবা প্রভাস ঘোষ লোক জন নিয়ে তাঁদের বাড়ি চড়াও হন। তাঁর মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে তাঁকে মারধর করেন এবং রাজেশ কোথায় আছে জানতে চান। রাজেশের কাকা বিদ্যুৎ রায় বলেন, “গ্রামের কয়েক জনের কাছে থেকে শুনতে পাই, প্রিয়ঙ্কা ও রাজেশ এক সঙ্গে পালিয়েছে। ওদের খোঁজার জন্য দু’টি মোটরবাইকে বেশ কিছু লোক গ্রামের বিভিন্ন রাস্তায় চক্কর খাচ্ছিল। সারা রাত এ ভাবে চলার পর ভোর তিনটে নাগাদ প্রিয়ঙ্কার দাদা পীযূষ ও বাবা প্রভাস আমাদের বাড়িতে এসে জানান, রাজেশ গ্রামের নয়ন দেবনাথের আমবাগানে আছে। আমি আর দাদা দৌড়ো গিয়ে দেখি, আমগাছের ডালে ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় রাজেশের দেহ ঝুলছে! ওকে নামিয়ে করিমপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তারবাবু জানান যে, ও মারা গিয়েছে।”

ভক্তিলতাদেবীর অভিযোগ, ‘‘ওরা বড়লোক আর আমরা খুব গরিব। তাই প্রিয়ঙ্কার বাড়ির লোক আমার ছেলেকে ফোন করে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করেছে।’’ ঘটনাস্থল থেকে দুটি বাইক ও প্রিয়াঙ্কার সাইকেল উদ্ধার করেছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন