কেরলে যাওয়া শ্রমিকদের তালিকা তৈরি করছে প্রশাসন

ওই সংখ্যা অবশ্য আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা জেলা প্রশাসনের কর্তাদের। 

Advertisement

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৮ ০২:০৮
Share:

কেরলে আটকে রয়েছে আত্মীয়-পরিজনেরা। তাঁদের পরিচয়পত্র নিয়ে প্রশাসনের দুয়ারে। ডোমকলে। ছবি: সুজাউদ্দিন।

একটা করে দিন যাচ্ছে। কেরলে আটকে পড়া মুর্শিদাবাদের শ্রমিকদের তালিকা ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে!

Advertisement

গত তিন দিনে মুর্শিদাবাদ জেলাপ্রশাসন যে তালিকা তৈরি করেছে, তাতে শ্রমিকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার। শুক্রবার ওই সংখ্যা ছিল ৪২৮ জন, শনিবার ২৫৩৫ জন এবং রবিবার ২২০০ জনের তালিকা তৈরি করেছে প্রশাসন। ওই সংখ্যা অবশ্য আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা জেলা

প্রশাসনের কর্তাদের।

Advertisement

তবে শুরুতে প্রশাসনের কাছে সঠিক কোনও তথ্য না থাকায় অসংগঠিত ওই শ্রমিকদের বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে প্রতি পদে ঠোক্কর খেতে হয় প্রশাসনিক কর্তাদের। শেষ পর্যন্ত কেরলে আটকে পড়া শ্রমিকদের পরিবারের লোকজনের চাপে ব্লক প্রশাসন স্তরে কমিটি গড়ে বানভাসি শ্রমিকদের সম্বন্ধে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করার কাজে নেমেছে তারা। আপাতত ওই সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার বলে জানা গিয়েছে।

দুয়ারে ইদ্দুজোহা। বানে ভাসছে কেরল! সেখানে জলবন্দি মুর্শিদাবাদের বহু মানুষ। তাঁদের সাথে পরিবারের লোকজন ঠিকমত যোগাযোগ করতে না পারায় উদ্বেগের অন্ত নেই মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন প্রান্তে। এখন জেলার ওই শ্রমিক যাঁরা কয়েক হাজার দূরের রাজ্যে পড়ে রয়েছেন, তাঁদের উদ্ধারে মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন কী কোনও পদক্ষেপ করছে?

মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক পি উলাগানাথন বলছেন, “বন্যার জেরে কেরলে এই জেলার যারা আটকে আছেন, তাঁদের ঠিকানা-সহ যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করার জন্য ব্লক স্তরে কমিটি গড়া হয়েছে। এ বিষয়ে প্রচার করার পাশাপাশি তথ্য সংগ্রহ করে আমরা রাজ্যে পাঠাচ্ছি। কেরলে কর্মরত মুর্শিদাবাদের প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিকের তালিকা আমরা রাজ্যে পাঠিয়েছি। ওই তালিকায় কেরলে আটকে থাকা শ্রমিকের মোবাইল নম্বর-সহ মুর্শিদাবাদের ঠিকানা এবং কেরলে কোথায় ও কি কাজে গিয়েছেন বিস্তারিত দেওয়া হয়েছে।”

জেলাশাসকের দাবি, প্রতিটি ব্লকে বিডিওকে সামনে রেখে কমিটি গঠন করা হয়েছে। যারা কেরলে কাজে আছেন, তাঁদের পরিবারের লোকজনের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এছাড়া আটকে পড়া লোকজনের তথ্য যাতে ব্লকে জানানো হয়ে সে বিষয়েও এলাকায় প্রচার করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর কেরলে আটকে থাকা মুর্শিদাবাদের বাসিন্দাদের কেরল প্রশাসনের মাধ্যমে রাজ্য সরকার ফেরানোর ব্যবস্থা করছে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার দুপুর ২.৩০টায় ও সন্ধ্যা ৬ টায় এর্নাকুলাম দক্ষিণ রেলস্টেশনে বন্যায় আটকে পড়া প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য দু’টি বিশেষ ট্রেন দেওয়া হয়েছে। ওই ট্রেন দুটি চেন্নাই যাবে। যারা চেন্নাই হয়ে বাড়ি ফিরতে চান, তাঁদের জন্য ওই বিশেষ ট্রেন দুটি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও অতিরিক্ত ট্রেন দেওয়ার কথা রয়েছে। এ বিষয়ে একটি অডিও বার্তা মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনের তরফে টিভি, রেডিও, হোয়াটসঅ্যাপ, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার হচ্ছে।

তবে কেরলে আটকে পড়া মানুষগুলোর টাকাপয়সা ফুরোনোর মুখে। এমন অবস্থায় তাঁরা দু’বেলা ঠিকঠাক খাবারদাবার পাচ্ছেন কি না, সে নিয়েই চিন্তায় রয়েছে পরিবারগুলো।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement