সব স্কুলেরই তথ্য হাতে চায় সরকার

দেরিতে হলেও টনক নড়ল রাজ্যের শিক্ষা দফতরের। সমস্ত স্কুল সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

Advertisement

মনিরুল শেখ

শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:১৪
Share:

পার্থ চট্টোপাধ্যায়

দেরিতে হলেও টনক নড়ল রাজ্যের শিক্ষা দফতরের। সমস্ত স্কুল সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে দাড়িভিট স্কুলে দুই শিক্ষকের নিয়োগ নিয়ে গন্ডগোলে দু’জনের মৃত্যুর ঘটনায় সোমবারই সব জেলার স্কুল পরিদর্শকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানাচ্ছেন, স্কুলগুলির বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে হবে বলে সেই সভাতেই মন্ত্রী বিদ্যালয় পরিদর্শকদের নির্দেশ দেন।

সেই মতো তড়িঘড়ি একগুচ্ছ প্রশ্নমালা তৈরি শুরু করে শিক্ষা দফতর। মঙ্গলবার সকালে জেলার সব স্কুলেই তা পাঠানো হয়েছে। সেই প্রশ্নমালা ই-মেল মারফত পাঠানো হয়েছে স্কুলগুলিতে। বলা হয়েছে, দিন দুয়েকের মধ্যে অনলাইনে উত্তর পাঠাতে হবে। স্কুলের নাম, স্কুলের ইউডিআইএসই কোড, কোন মহকুমা ও কোন চক্রে অর্ন্তগত স্কুলটি, স্কুলের চরিত্র (উচ্চ প্রাথমিক, হাইস্কুল, উচ্চ মাধ্যমিক নাকি অন্য কোনও শ্রেণির), ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা, ছাত্রছাত্রীদের জন্য কতগুলি শৌচাগার রয়েছে ইত্যাদি জানাতে হবে।

Advertisement

আর জানতে চাওয়া হয়েছে, স্কুলে শিক্ষকের পদ কতগুলি, এই মুহূর্তে কত জন শিক্ষক রয়েছেন। নগরউখরা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুশীতাভ ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘এটা খুব দরকার ছিল। এখন তো কম্পিউটার খুললেই জানা যাবে কোন স্কুলের কী অবস্থা। আর স্কুলে শিক্ষক পাঠানোর আগেও দফতর জানতে পারবে, ওই স্কুলে আদৌ কোনও শিক্ষকের দরকার আছে কি না।’’

কিছু দিন ধরেই একটি বিষয় নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে যে দাড়িভিটের ওই স্কুলে আদৌ উর্দু ও সংস্কৃতের জন্য কোনও শূন্যপদ ছিল কি না। এই পরিস্থিতিতে জেলা শিক্ষা দফতরের প্রশ্নমালা পাঠিয়ে স্কুলগুলি সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা তৈরির চেষ্টাকে স্বাগত জানাচ্ছেন সকলেই। জেলার এক অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের মতেও, এই কাজ আগেই করা দরকার ছিল। সরকারের কাছে যে কোনও প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে সব রকমের তথ্য থাকবে, এটাই তো স্বাভাবিক। এ বার হয়তো নানা বিষয়ে জটিলতা তৈরি বন্ধ হবে।

জেলা শিক্ষা দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, যে স্কুলে সবচেয়ে বেশি শূন্যপদ রয়েছে, অনেক সময়েই দেখা যায় যে নিয়োগের পরে সেই স্কুলেই কম শিক্ষক দেওয়া হয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তো এটা হামেশাই ঘটে। কিন্তু স্কুলগুলি সম্পর্কে তথ্য থাকলে এমনটা হবে না। পরিকাঠামো সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেও সরকার বুঝতে চাইছে, কোন স্কুল কতটা বেহাল। সেই স্কুলগুলিকে সরকার অনুদান দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেবে।

জেলার বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এটা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে করা হচ্ছে। এতে অনেক দিক দিয়েই সুবিধা হবে। অনেক সময়ে বিদ্যালয় পরিদর্শন করতে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করতেই সময় চলে যায়। সেই সময়া বাঁচবে, অন্য খুঁটিনাটির দিকে মন দেওয়া যাবে।’’ আর এক কর্তার ধারণা, সব তথ্য কম্পিউটারেই মজুত থাকার ফলে আর সমস্যা হবে না। প্রশাসনিক কাজে গতি আসবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন