মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দু’দিনের মুর্শিদাবাদে জেলা সফর চলাকালীন তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল বড়ঞা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত দফায় দফায় বোমাবাজির ঘটনায় উভয় পক্ষের মোট পাঁচ জন জখম হয়েছে। তাদের মধ্যে তিন জন নাবালক-বালিকা রয়েছে। দু’পক্ষরেই দাবি তারা তৃণমূল সমর্থক। জখমদের বড়ঞা গ্রামীণ ও কান্দি মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একজনকে পরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হালপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। ঘটনার পরে ওই গ্রামে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত পঞ্চায়েত ভোটে ওই গ্রামের বাসিন্দা মতিহার বিবি কংগ্রেসের টিকিটে পঞ্চায়েতের সদস্য হন। কিন্তু লোকসভা ভোটের আগে মতিহার বিবি ও তার স্বামী কিবরিয়া খান অনুগামীদের নিয়ে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। ওই গ্রামেরই বাসিন্দা সায়ের আলি খান তৃণমূলেই ছিলেন। সায়ের আলি বড়ঞা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি জালালউদ্দিনের অনুগামী বলেই পরিচিত। গ্রাম কার অধীনে থাকবে তাই নিয়ে শুরু হয় দ্বন্দ্ব। সপ্তাহ খানেক আগে দ্বন্দ্ব মাত্রা ছাড়ায়। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে এলাকায় পুলিশি টহল জোরদার করা হয়। সেই সঙ্গে কিবরিয়া খানকে কিছু দিনের জন্য গ্রাম থেকে সরে থাকার পরামর্শও দেওয়া হয়। কিন্তু মঙ্গলবার বাড়িতে ইফতারের খাওয়াদাওয়ার সময় কিবরিয়া খানের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়া হয়। বোমার আঘাতে জখম হয় কিবরিয়ার মেয়ে পারভিন খাতুন ও নাতনি হাসিনা খাতুন। অভিযোগ, সায়ের আলি খান ও তার অনুগামীরা বোমা ছুড়েছে। তারপর শুরু হয় দুপক্ষের বোমাবাজি। বোমার আঘাতে সায়ের আলি খান ও তার স্ত্রী আরজাহান বিবি জখম হন। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি প্রায় ৭০টির বেশি বোমা ফাটানো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বড়ঞা ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি জালালউদ্দিন বলেন, “সায়ের আলি তৃণমূলের সক্রীয় কর্মী। কিবরিয়া কংগ্রেস করে। ওরা পরিকল্পিত ভাবে সায়েরের উপর বোমা ছোঁড়ে। কিবরিয়ার সাথে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই।” যদিও কিবরিয়ার দাবি, ‘‘বছর খানেক হল কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছি। ব্লক সভাপতি জালালউদ্দিন আমাকে খুন করার জন্য সায়ের আলিকে ব্যবহার করছে।”
পুলিশ ঘটনাস্থল কয়েকটি তাজা বোমা উদ্ধার করেছে। কান্দি মহকুমার এসডিপিও সন্দীপ সেন বলেন, “তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দের জেরে ওই ঘটনা। পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।”