মাফিয়াদের থেকে টাকা নিয়ে বিপাক

আনন্দবাজারে মঙ্গলবারের কাগজে মিল্টনের কথা প্রকাশিত হওয়ার পরেই প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় শুরু হয়েছিল।

Advertisement

মনিরুল শেখ

হরিণঘাটা শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:৪২
Share:

মাটি পাচার। নিজস্ব চিত্র

জোর গলায় সংবাদমাধ্যমের সামনে তিনি জানিয়েছিলেন, দলীয় তহবিল ভরাতে হরিণঘাটার কাষ্ঠডাঙা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের সাত শিমুলিয়ায় তিনি মাটি মাফিয়াদের থেকে টাকা নিয়ে অবৈধ ভাবে মাটি কাটায় মদত দিচ্ছেন। তৃণমূলের সেই স্থানীয় নেতা মিল্টন সরকারকে মঙ্গলবার শো-কজ করেছে দল।

Advertisement

আনন্দবাজারে মঙ্গলবারের কাগজে মিল্টনের কথা প্রকাশিত হওয়ার পরেই প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় শুরু হয়েছিল। ব্লক তৃণমূলের এক নেতা বলেন, ‘‘মিল্টন এক সময় পঞ্চায়েতের সদস্য ছিলেন। এখন ওঁর স্ত্রী পঞ্চায়েত সদস্য। কিন্তু মিল্টন তো আর সরকারি আধিকারিক নন যে, মাটি কাটার অনুমতি দেবেন। তা ছাড়া তৃণমূলের ব্লক নেতৃত্ব মাটি মাফিয়াদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে দলের তবহিল ভরানোর কোনও নির্দেশও ওকে দেয়নি।’’ মিল্টনের মন্তব্যে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে এবং নেতারা অস্বস্তিতে পড়েছেন বলে খবর।

মঙ্গলবার ব্লক তৃণমূলের সভাপতি চঞ্চল দেবনাথ মিল্টনকে ডেকে পাঠান। সেখানে মাটি কাটার টাকা নেওয়ার বিষয়ে মিল্টনকে প্রশ্ন করা হয়। দলীয় সূত্রের খবর, মিল্টন কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি। চঞ্চল দেবনাথ বলেন, ‘‘মিল্টনকে শো-কজ করা হয়েছে। কেন তিনি অবৈধ মাটি কাটায় মদত দিয়েছিলেন, তা তিন দিনের মধ্যে জানাতে হবে। উত্তর সন্তোষজনক না হলে ওঁকে দল থেকে বরখাস্ত করা হবে।’’ আর মিল্টন এ দিন বলছেন, ‘‘আমি বেকায়দায় রয়েছি। দল যা পদক্ষেপ করবে তা মেনে নিতে হবে।’’ এলাকার তৃণমূল নেতাদের একাংশ জানাচ্ছেন, মিল্টন ও তাঁর শাগরেদরা নানারকম অনিয়ম করে বেড়ান। দলের অনেকের বিরোধিতা সত্ত্বেও ওঁরা টাকার বিনিময়ে মাটি কাটায় মদত দেওয়ার কারবার চালাচ্ছেন। মঙ্গলবার সকাল থেকেই সাত শিমুলিয়ায় মাটি কাটা বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের গনেশ মণ্ডল বলেন, ‘‘দল যে মাফিয়াদের প্রশয় দেয় না, এই ঘটনাতেই প্রমাণ হয়ে গেল। নিয়মের বাইরে গেলে শাস্তি পেতেই হবে।’’

Advertisement

সাতশিমুলিয়া গ্রামে অসীম ভট্ট বহু দিন ধরেই আন্দামানে থাকেন। তিনি গ্রামে তাঁর ৭৬৪ দাগের তিন ফসলি জমিতে পুকুর কাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা শুকদেব সরকার নামে এক জন ওই মাটি কিনেছিলেন বলে এলাকার লোক জানিয়েছেন। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের কাছ থেকে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। শুকদেব সোমবার নির্লিপ্ত গলায় বলেছিলেন, ‘‘এলাকার শাসক দলের নেতাদের টাকা দিয়ে মাটি কাটছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন