জেএনএম

গাফিলতি ঢাকার চেষ্টা, রিপোর্ট চাইল স্বাস্থ্যভবন

প্রসূতির চিকিৎসায় গাফিলতির ঘটনায় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে ‘বাঁচানোর’ চেষ্টা শুরু করে দিল জেএনএম মেডিক্যাল কলেজের প্রসূতি বিভাগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কল্যাণী শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:০২
Share:

প্রসূতির চিকিৎসায় গাফিলতির ঘটনায় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে ‘বাঁচানোর’ চেষ্টা শুরু করে দিল জেএনএম মেডিক্যাল কলেজের প্রসূতি বিভাগ।

Advertisement

তবে, বিষয়টি বিস্তারিত জানতে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। হাসপাতাল সূত্রে শুক্রবার তা মেনে নেওয়া হয়েছে।

রিপোর্টের বিষয়ে সুপার মুখ খুলতে চাননি। হাসপাতাল সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, বিদ্যুৎবাবু তাঁর প্রাথমিক রিপোর্টে অভিযুক্তদের আড়াল করারই চেষ্টা করেছেন।

Advertisement

ফেব্রুয়ারির গোড়ায় পেটে যন্ত্রণা নিয়ে কল্যাণী জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন সাড়ে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা মৌমিতা সরকার। চিকিৎসকরা জানান, তরল ক্ষরণ হলে গর্ভস্থ শিশুকে বাঁচানো কঠিন। সঙ্কট বাড়বে মৌমিতারও। শেষ পর্যন্ত মৌমিতার পরিবারের সম্মতিতেই গর্ভপাত করার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।

৬ ফেব্রুয়ারি মাঝরাতে গর্ভপাত করানো হয় তাঁর। পর দিন তাঁকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু, বাড়ি ফিরেই ফের যন্ত্রণা শুরু হয় তাঁর। আলট্রা সোনোগ্রাফি করে দেখা যায়, তাঁর জরায়ুতে রয়ে গিয়েছে জীবিত ভ্রুণ। বেগতিক দেখে চাকদহ সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই তাঁর মৃত ভ্রুণ বের করা হয়।

ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে— হাসপাতালের বাইরে থেকে আলট্রা সোনোগ্রাফি করা হয়েছে। ফলে তা বিবেচনার মধ্যে আনা হয়নি। কিন্তু, চাকদহ হাসপাতালের ‘ডিসচার্জ সার্টিফিকেট’ তো ছিল, সেখানে তো পরিষ্কার উল্লেখ ছিল, মৃত শিশু প্রসব হয়েছে। তার কথা রিপোর্টে উল্লেখই করা হয়নি।

গত সোমবার মৌমিতার স্বামী পীযূষ সরকার হাসপাতালের সুপারের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতেই সুপার সুবিকাশ বিশ্বাস প্রসূতি বিভাগের প্রধান বিদ্যুৎ বসুর কাছে একটি রিপোর্ট চেয়ে পাঠান। বৃহস্পতিবার সেই রিপোর্ট জমা পড়েছে। এ দিনই বিষয়টি নিয়ে রিপোর্ট চেয়ে পাঠায় স্বাস্থ্য ভবন। জেএনএম হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সুপার বিদ্যুৎবাবুর রিপোর্টের সঙ্গে নিজের মন্তব্য জুড়ে শুক্রবার তা স্বাস্থ্য ভবনে পাঠিয়েছেন।

রিপোর্টে রয়েছে, গর্ভস্থ ভ্রুণ জরায়ু থেকে স্বাভাবিকভাবেই বেরিয়ে যায়। তা কণিকাকে দেখানোও হয়। পরের দিন মৌমিতার কোনও শারীরিক অসুবিধা ছিল না। সেই জন্য তাঁকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। যে রিপোর্টের ভিত্তিতে বলা হয়েছে, মৌমিতার গর্ভের শিশু জীবিত ছিল সেই পরীক্ষা বাইরে থেকে করা হয়েছে, সরকারি হাসপাতালে নয়।

বেশ কিছু চিকিৎসকের প্রশ্ন, সাধারণভাবেই যখন মৌমিতার জরায়ু থেকে শিশু বের হয়েছিল, তখন ছুটি দেওয়ার আগে কেন আরও একবার আলট্টা সোনোগ্রাফি করে দেখা হল না। তার উল্লেখ রিপোর্টে নেই কেন? হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সে দিন লেবার রুমে ছিলেন দুই জুনিয়র ডাক্তার। হাসপাতালেরই কিছু চিকিৎসকের প্রশ্ন, ডাক্তারির শুরুতেই এমন ভুল? তাঁদের বাঁচানোর এমন চেষ্টাই বা কেন?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন