রক্তের সঙ্কট কমাতে শিবির স্বাস্থ্যকর্মীদের

একে ভোটে রক্ষা নেই, দোসর আবার গরম। গোটা রাজ্যের মতো মুর্শিদাবাদ জেলা জুড়েই তাই রক্তের সঙ্কট তীব্র আকার নিয়েছে। অগত্যা এই সঙ্কট কাটাতে জেলার সমস্ত হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মীদের রক্ত দিতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৬ ০২:৩৪
Share:

একে ভোটে রক্ষা নেই, দোসর আবার গরম। গোটা রাজ্যের মতো মুর্শিদাবাদ জেলা জুড়েই তাই রক্তের সঙ্কট তীব্র আকার নিয়েছে। অগত্যা এই সঙ্কট কাটাতে জেলার সমস্ত হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মীদের রক্ত দিতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

ইতিমধ্যে তাতে সাড়াও মিলেছে। মঙ্গলবার শক্তিপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৫২ জন এবং অনুপনগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৪১ জন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী রক্ত দিয়েছেন। বুধবার জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে রক্ত দিয়েছেন ৩৪ জন স্বাস্থ্যকর্মী। শনিবার রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে সুতি ২ ব্লকের মহেশাইল স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। ২৪ মে রক্ত দেবেন ফরাক্কার বেনিয়াগ্রাম স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীরা। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এ ভাবেই রক্তদান শিবির করা হবে জেলার প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও হাসপাতালে।

স্বাস্থ্যকর্মীদের উৎসাহ দিতে খোদ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভাশিস সাহা প্রথম রক্ত দেন লালবাগে। সেখানেই তিনি রক্ত সঙ্কট কাটাতে স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এই ধরনের শিবির করার আবেদন জানান। সেই থেকেই জেলা জুড়ে এই উদ্যোগ।

Advertisement

বহরমপুরে জেলা হাসপাতালে মাসে আড়াই হাজার ইউনিট রক্তের দরকার। বিভিন্ন শিবির থেকে মেলে মাসে মাত্র ১৭০০ ইউনিট। জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে মাসে প্রয়োজন ৪০০ ইউনিট। অন্য তিন মহকুমা হাসপাতালে মাসে প্রায় ১০০০ ইউনিট রক্তের প্রয়োজন হয়। মহকুমা হাসপাতালগুলিতে সে রক্ত মেলে চাহিদার অর্ধেক।

ফলে সারা বছর ধরেই রক্ত সঙ্কটে নাকাল হতে হয় মুর্শিদাবাদের মানুষকে। কারণ ৮০ লক্ষ বাসিন্দার এই জেলায় রক্তদাতার হার বলার মতো অবস্থাতেই নেই। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের হিসেবে, সারা বছর গোটা জেলায় রক্তের প্রয়োজন যেখানে প্রায় ৪৮ হাজার ইউনিট, সেখানে দাতার সংখ্যা বড় জোর ৩০ হাজারের বেশি নয়। আর সঙ্কটটা সেখানেই।

এই সঙ্কট কাটাতে সারা রাজ্যের মতো এ জেলাতেও মুখ্য ভূমিকা নেন মূলত বাম ছাত্র ও যুব সংগঠনের কর্মীরা। এ জেলাতে রক্তদানে কংগ্রেস কর্মীদের ভূমিকাও যথেষ্ট সদর্থক। তুলনায় শাসক দল, তৃণমূল রক্তদানের উৎসাহে অনেকটাই পিছনে। জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা এর জন্য রক্তদানে আগ্রহ না থাকা ও সচেতনতার অভাবকেই দায়ী করছেন।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভাশিস সাহা বলেন, “প্রত্যেক স্বাস্থ্যকর্মীর উচিৎ বছরে একবার করে হলেও রক্তদান করা। এমনকী জেলার সরকারি কর্মীদেরও এ ব্যাপারে এগিয়ে আসা উচিত। তাঁদেরও চিঠি দিয়ে রক্তদানের জন্য অনুরোধ জানানো হবে।’’

জঙ্গিপুরের সহকারি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শাশ্বত মণ্ডলের কথায়, “জেলায় বহু কলেজ রয়েছে। সেক্ষেত্রে কলেজ কর্তৃপক্ষ যদি পড়ুয়াদের রক্তদানের ব্যাপারে উৎসাহিত করতে পারেন তাহলেও জেলায় রক্তের সঙ্কট অনেক কমে যাবে।’’

ফরাক্কা ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সজল পণ্ডিত বলেন, “এর আগেও স্বাস্থ্য কর্মীরা রক্তদান করেছেন। কিন্তু সামগ্রিক ভাবে জেলা জুড়ে এই উদ্যোগ এই প্রথম। এ বার সকলেরই এগিয়ে আসা উচিত। জেলায় শিক্ষকের সংখ্যাও তো কম নেই। তাঁরাও যদি এগিয়ে আসেন তাহলেও সমস্যা অনেকটাই কমবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement