পণ না পেয়ে কোপ, মৃত্যু

পাশের ঘরে আটকে রেখে লাজিনা খাতুনকে (২০) হাঁসুয়া দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপ মারতে থাকে মহসিন। সোমবার রাতে বেলডাঙার বড়ুয়া কলোনির ওই ঘটনার পরে পড়শিরা ছুটে আসেন। মহসিন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বড়ুয়া শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৯ ০৩:৩৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

বাপের বাড়ি যেতে চেয়েছিলেন তিনি। ভাই আজিজুল গিয়েছিল শ্বশুরবাড়ি থেকে দিদিকে নিয়ে আসতে। কিন্তু দাবি মতো দু’লক্ষ টাকা না পেলে স্ত্রীকে বাপের বাড়ি যেতে দেবেন না বলে জানান মহসিন মল্লিক। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রী’র মধ্যে বিবাদ চরমে উঠলে স্ত্রীকে মারধর শুরু করে মহসিন। বাধা দিতে গেলে আজিজুলকে পাশের ঘরে আটকে রেখে লাজিনা খাতুনকে (২০) হাঁসুয়া দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপ মারতে থাকে মহসিন। সোমবার রাতে বেলডাঙার বড়ুয়া কলোনির ওই ঘটনার পরে পড়শিরা ছুটে আসেন। মহসিন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়।

Advertisement

পরে দরজা ভেঙে আজিজুলকে উদ্ধার করার পরে গুরুতর জখম লাজিনাকে বেলডাঙা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে ভর্তির ব্যবস্থা করেন প্রতিবেশীরা। সেখানে থেকে তাঁকে বহরমপুরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেই ভর্তির কিছু ক্ষণের মধ্যে মারা যান ওই তরুণী। ওই ঘটনায় মঙ্গলবার মহসিন মল্লিকের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন ওই তরুণীর পরিবার। তার আগে মহসিন মল্লিককে গ্রেফতারের দাবিতে এ দিন বেলডাঙা থানায় বিক্ষোভও দেখান এলাকার মানুষ। বেলডাঙা থানার পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

মৃতের ভাই আজিজুল হাকিম বলেন, ‘‘আমি সোমবার সন্ধ্যায় এসেছিলাম দিদিকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু আমার কাছে দু’লক্ষ টাকার পণ দাবি করে দোলাভাই। কিন্তু আমার কাছে টাকা নেই বলাতে দিদিকে মারধর শুরু করে। বাধা দিতে গেলে আমাকে ঘরের মধ্যে আটকে রেখে দিদিকে হাঁসুয়া দিয়ে কোপ মারতে থাকে। ঘরের ভেতর থেকে নৃশংস ওই দৃশ্য চোখে দেখতে পারিনি।’’ তিনি জানান, দিদির আর্তনাদ শুনে এলাকার মানুষ ছুটে এলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় মহসিন। পরে দরজা ভেঙে এলাকার মানুষ তাঁকে উদ্ধার করেন এবং ওই পড়শিদের সাহায্যে তিনি দিদিকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তির ব্যবস্থা করেন তিনি। কিন্তু ভর্তির কিছু ক্ষণ পরেই মারা যান দিদি।

Advertisement

বেগুনবাড়ি মাঠপাড়া এলাকার লাজিনার সঙ্গে বছর দুয়েক আগে বিয়ে হয়েছিল বেলডাঙার মির্জাপুর গ্রামের মহসিনের সঙ্গে। নিঃসন্তান ওই দম্পতি বড়ুয়া কলোনি এলাকায় বাড়ি ভাড়া করে থাকতেন। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই পণের জন্য শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাত পেশায় গামছা ব্যবসায়ী মহসিন। কিন্তু ব্যবসায় তার মন ছিল না। স্ত্রী’কে বাপের বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আসার জন্য চাপ সৃষ্টি করত। ওই অত্যাচার সইতে না পেরে লাজিনা বাপের বাড়ি চলে যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন