থানা থেকে ফোনটা এসেছিল আচমকা—‘তোমার বাবা গুরুতর জখম। বহরমপুর মেডিক্যালে এসো।’ গাড়ি ভাড়া করে দুপুরেই সেই হাসপাতালে গিয়ে নওদার নীলাদ্রি মণ্ডল দেখেন ব্যান্ডেজে মোড়া ‘বাবাকে’ তখন সিটি স্ক্যান করাতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তার পর অপেক্ষা! ঘন্টা কয়েক পরে তাঁকে বেডে দেওয়ার পরে চমকে ওঠেন নীলাদ্রি—অবিকল বাবার মত। কিন্তু রেজিনগর থেকে ঠিক তখনই আসে বাবার ফোন—‘কী রে কেমন আছিস?’
বেডের উপরে ঝুঁকে পড়ে এবার আস্ত পরিবারটাই চমকে ওঠে, তাহলে ইনি কে? বাবার ফোন ধরে থরথর কাঁপতে থাকেন নীলাদ্রি।
আশঙ্কাটা মিথ্যে হলে কার না ভাল লাগে! শুক্রবার ঠিক তেমনটাই হয়েছিল নওদার নীলাদ্রির। হাসপাতালে হতভম্ব দাঁড়িয়ে তাকার মাঝেই জানতে পারেন, আহত ওই বৃদ্ধ মারা গিয়েছে। নাম-পরিচয়হীন, শুধু নীলাদ্রির বাবার অবিকল ‘ক্লোন’ মানুষটি নিশ্চুপে চলে গেলেন।
শুক্রবার সকালে রেজিনগরের তকিপুরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে গাড়ির ধাক্কায় গুরুতর জখম হয়েছিলেন ওই বৃদ্ধ। ত়ড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
সে কথা জানার পরেই নীলাদ্রী ও পরিবারের সদস্যরা গাড়ি ভাড়া করে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছান। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধপত্র কিনে এনে দেওয়া থেকে রাতে রোগীর সেবা করার জন্য এক জন আয়াও ঠিক করে ফেলেন নীলাদ্রী। কিন্তু তিনি কে? নীলাদ্রী জানান, ওই রোগীর শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক থাকায় তিনি কথা বলতে পারছিলেন না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও ওই রোগীর নাম-ঠিকানা জানতে পারেননি।শুধু প্রশ্ন আর মনখারাপ নিয়েই হাসপাতাল থেকে ফিরে এসেছেন নীলাদ্রি।