জিতলেই তো তৃণমূলে, কী বলেন আপনি

অধীর তাঁদের পাল্টা শুনিয়েছেন, ‘লড়াই’য়ের কথা। ভরসা দিয়েছেন ফের কংগ্রেসের সুদিন ফিরবে। তিনি বলেন, ‘‘নেতারা দল ছেড়ে গেলেও মনে রাখবেন, কর্মীরাই দলের ভরসা। তাঁরা কিন্তু দল বদলাচ্ছে না। সেটাই কংগ্রেসের আসল বল।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৭ ০১:২০
Share:

কংগ্রেসের টিকিয়ে জয়ের পরে তৃণমূলে পা বাড়ানো, তা সে শাসক দলের প্রলোভনেই হোক কিংবা হুমকিতে, একটা চেনা রুট!

Advertisement

বিধান ভবনের আনাচকানাচ থেকে প্রশ্নটা তাঁর কাছে ফিরেছে বার বার— তা হলে নির্বাচনে লড়াই করে লাভ কী? এ বার, দলের নিচুতলার কর্মীদের কাছ থেকেও সে প্রশ্ন শুনতে হল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে।

সোমবার কৃষ্ণনগরে দলীয় কর্মীর সঙ্গে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন সংক্রান্ত বৈঠকে অধীর চৌধুরীর কাছে বার বারই উড়ে এলে প্রশ্ন, কাদের জিতিয়ে আনব তাহলে, কংগ্রেসের টিকিটে জয়ের পরেই তো চলে যাবে তৃণমূলে? এল সেই অমোঘ প্রশ্নও— রাজ্যে কংগ্রেসের মূল প্রতিপক্ষ কারা, তৃণমূল না বিজেপি?

Advertisement

কখনও পাশ কাটিয়ে কখনও বা সরাসরি যে অধীর তাঁর নিচুতলার কর্মীদের দিয়েছেন, তাতে যে সকলে বিশেষ ভরসা পেয়েছেন এমনটা বলা যাচ্ছে না। বৈঠক শেষে তাই অনেককেই বলতে সোনা গিয়েছে, ‘‘ধোঁয়াশা কিন্তু কাটল না!’’ প্রদেশ সভাপতিকে মঞ্চে বসিয়ে এ দিন প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছিলেন কংগ্রেসের রানাঘাট ২ ব্লক সভাপতি অপূর্ব সমাদ্দার, “কাকে নিয়ে লড়াই করব? শ্রম দেব, অর্থ দেব আর জিতে সে আমাদের কথা না শুনে চলে যাবে তৃণমূলে!”

চাকদহ ব্লক সভাপতি বিধুভূষণ চক্রবর্তীর একটা প্রশ্ন ছিল, “পঞ্চায়েত ভোটে আমাদের প্রধান শত্রু কে? সেই বিষয়টা আমাদের আগে ঠিক করে দিন, বিজেপি না তৃণমূল?” মঞ্চে বসে অধীরকে সে সময়ে মোবাইলে নিবিষ্ট থাকতে দেখা গেলেও পরে তিনি উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করলেন। এরই মাঝে হাঁসখালি ব্লক সভাপতি ছুড়ে দিলেন মোক্ষম প্রশ্নটা-“মাঠে ময়দানে লড়াই করে তৃণমূলকে না হয় রুখে দেব। কিন্তু পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে লড়াইটা করব কি করে বলুন তো?”

অধীর তাঁদের পাল্টা শুনিয়েছেন, ‘লড়াই’য়ের কথা। ভরসা দিয়েছেন ফের কংগ্রেসের সুদিন ফিরবে। তিনি বলেন, ‘‘নেতারা দল ছেড়ে গেলেও মনে রাখবেন, কর্মীরাই দলের ভরসা। তাঁরা কিন্তু দল বদলাচ্ছে না। সেটাই কংগ্রেসের আসল বল।’’

তাঁর পুরনো অভিজ্ঞতা এবং স্মৃতি হাতড়ে অধীর জানান, ১৯৯১ সালে মাত্র এগারো দিনের প্রচারে নবগ্রামের আসনে তিনি মাত্র তেরোশো ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন। তিনি জানান, কীভাবে পাঁচ বছর এলাকায় না ঢুকতে পেরে শুধু মাত্র ক্যাসেটে তার বক্তব্য চালিয়ে কর্মীদের নানান কর্মসূচির করিয়ে ১৯৯৬ সালে সেই নবগ্রামে জিতে ছিলেন তিনি। তিনি এদিনের সভায় কর্মীদের হতাশ না হয়ে নানান কর্মসূচির মধ্যে থাকার পরামর্শ দেন। বলেন, “ভোটে কি হবে সেটা পরের কথা। ভোট কারও ফিক্সড ডিপোজিট নয়। তৃণমূল যখন ক্ষমতায় ছিল না তখনই বেশি শক্তিশালী ছিল।”

এ দিন কৃষ্ণনগরের রবীন্দ্রভবনে কর্মিসভায় বলতে গিয়ে অধীররঞ্জন চৌধুরী তীব্র ভাষায় তৃণমূল ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, “শহীদ দিবস দিদির দয়ায় পিকনিক দিবসে পরিণত হয়েছে। এ বার সেই শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে দিনিমনিকে বলতে হয়েছে ভারতকে বাঁচাতে হলে সোনিয়াদির হাত শক্ত করতে হবে। আমাদের তো বলতে হচ্ছে না যে তার হাত ধরতে হবে। এটাই আমাদের নৈতিক জয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন