প্রতীকী ছবি।
চাহিদা মতো পণ দিতে না পারায় এক তরুণীকে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ উঠল তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। সোমবার রাতে জিয়াগঞ্জের খাসপাড়ার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, ওই তরুণীর নাম নার্গিস বিবি (২১)। তাঁর বাবার বাড়ি ভগবানগোলার ওরাহার গ্রামে।
এলাকার লোকজনের কাছে মেয়ের মারা যাওয়ার খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন জিয়াগঞ্জে এসে দেখেন, বারান্দায় দেহ ফেলে রেখে শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। মঙ্গলবার গোটা ঘটনা জানিয়ে নার্গিসের পরিবার জিয়াগঞ্জ থানায় নার্গিসের স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (লালবাগ) অংশুমান সাহা জানান, পণের জন্য শ্বাসরোধ করে ওই মহিলাকে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দুয়েক আগে বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান ভগবানগোলার নার্গিস বিবির সঙ্গে পেশায় রাজমিস্ত্রি মিলন শেখের বিয়ে হয়। বিয়ের সময়ে মিলনের পরিবার নগদ ১ লক্ষ টাকা দাবি করে। সেই মতো নার্গিসের পরিবার নগদ ৫০ হাজার টাকা, কয়েক ভরি সোনা ও আসবাবপত্র দেয়। বাকি ৫০ হাজার টাকা বিয়ের পরে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।
নার্গিসের বাবা পেশায় রাজমিস্ত্রি বাবলু শেখের অভিযোগ, পণ দিতে না পারার জন্যই মেয়ের উপরে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার শুরু করে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তাই নিয়ে অশান্তির জেরে মেয়ে গত দেড় মাস শ্বশুরবাড়ি পর্যন্ত যায়নি। তাঁদের বাড়ি থেকে পাঁচ দিন আগে জিয়াগঞ্জে যান ওই তরুণী। তার পরেই এমন ঘটনা।
নার্গিসের কাকা সানারুল শেখের অভিযোগ, ‘‘নার্গিস মারা যাওয়ার খবর তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন জানানোর প্রয়োজন মনে করেনি। পড়শিদের কাছে খবর পেয়ে আমরা রাতে গিয়ে দেখি, বাড়ির বারান্দায় মাদুরের উপরে মেয়ের দেহ পড়ে রয়েছে। বাড়ির সমস্ত ঘরের দরজায় তালা। বাড়িতে কেউ নেই।’’
রোকেয়া নারী উন্নয়ন সমিতির সম্পাদক খাদিজা বানু বলেন, ‘‘শিক্ষা ও সচেতনতা গড়ে তুলতে না পারলে ওই সমস্যা থেকে নিস্তার নেই।’’