স্ত্রীর স্মৃতিতে মাদ্রাসায় গ্রন্থাগার গড়লেন শিক্ষক

রাধারঘাটের বাসিন্দা স্বপনকুমার ঘোষ বাগমারা মাদ্রাসা শিক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষক। তাঁর স্ত্রী চন্দনা তালুকদার দৌলতাবাদের মদনপুর হাইস্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৭:২০
Share:

গ্রন্থাগারে বইয়ের আলমারি। নিজস্ব চিত্র

স্ত্রীর স্মৃতিতে নিজের স্কুলে গ্রন্থাগার গড়ে দিলেন এক শিক্ষক। প্রায় এক লক্ষ টাকা খরচে তৈরি ওই গ্রন্থাগারটি শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে পড়ুয়াদের জন্য খুলে দেওয়া হয়।

Advertisement

রাধারঘাটের বাসিন্দা স্বপনকুমার ঘোষ বাগমারা মাদ্রাসা শিক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষক। তাঁর স্ত্রী চন্দনা তালুকদার দৌলতাবাদের মদনপুর হাইস্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন। ২০১৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর হেপাটাইটিস-ই রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছিল। তার দু’বছর আগে ওই দম্পতির শিশুপুত্রেরও মৃত্যু হয়। স্ত্রীর স্মৃতিতে গত বছর চন্দনার স্কুল মদনপুর হাইস্কুলে লক্ষাধিক টাকা খরচ করে পরিস্রুত পানীয় জলের প্রকল্প তৈরি করে দিয়েছিলেন স্বপনবাবু। এ বার নিজের স্কুলেও গ্রন্থাগার তৈরি করে দিলেন তিনি। মাদ্রাসায় এতদিন কোনও গ্রন্থাগার ছিল না। পড়ুয়াদের যে এতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে, তা অনুভব করেছিলেন স্বপনবাবু। সম্প্রতি তিনি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের কাছে গ্রন্থাগার গড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। কর্তৃপক্ষ তাতে রাজি হয়ে যান। গ্রন্থাগার পেয়ে আপ্লুত ওই

মাদ্রাসার পড়ুয়ারাও। বাগমারা মাদ্রাসা শিক্ষাকেন্দ্রে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। চারটি শ্রেণিতে মোট ১৬৭ জন পড়ুয়া রয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা সাত। প্রধান শিক্ষক মহম্মদ সাইফুল হক বললেন, ‘‘আমাদের এখানে গ্রন্থাগার ছিল না। তাতে সমস্যা হত। স্বপনবাবু গ্রন্থাগার গড়ে দেওয়ার বিষয়ে প্রস্তাব দিলে তাই আমরা রাজি হয়ে যাই।’’ জানা গিয়েছে, মাদ্রাসার নিজস্ব ঘরে গ্রন্থাগার চালু করা হয়েছে। বইয়ের আলমারির পাশাপাশি স্বপনবাবু পাঁচশো বইও কিনে দিয়েছেন।’’

Advertisement

শনিবার গ্রন্থাগারে বই দেখতে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়।। অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া রফিকুল ইসলাম বলল, ‘‘গ্রন্থাগার হওয়ায় খুব সুবিধা হল। বাড়িতে গল্পের বই নিয়ে যেতে পারব।’’ স্বপনবাবু বলেন, ‘‘মদনপুর হাইস্কুলে পরিস্ত্রুত পানীয় জলের সমস্যা ছিল। আমার স্ত্রী জলবাহিত রোগে মারা গিয়েছে। তাই গত বছর ওই পরিস্রুত জলপ্রকল্প গড়ে দিই। বাগমারা পিছিয়ে পড়া এলাকা। এই মাদ্রাসায় গ্রন্থাগার ছিল না। তাই এই সিদ্ধান্ত। এ ভাবেই আমার স্ত্রীর স্মৃতি বেঁচে থাকুক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন