টিকিট না পেয়ে দলেরই প্রার্থীর বিরুদ্ধে গোঁজ হয়ে দাঁড়িয়ে প়ড়া মন্টু বিশ্বাসকে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
শনিবার বেলা ১০টা নাগাদ সমশেরগঞ্জে রেজাউল হক ওরফে মন্টুর উপরে হামলা হয়। তাঁর অভিযোগ, লাঠি ও ছুরি নিয়ে জনা দশেক দুষ্কৃতী চড়াও হয়েছিল। তাঁর গাড়িতে ভাঙচুর হয়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তিনি পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁকে ধরে চড়-ঘুষি মারা হয়। পরে এলাকার লোকজন ছুটে এলে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। তা সত্ত্বেও ভয়ে মন্টু রাস্তার ধারে একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। মিনিট চল্লিশ পরে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে।
কংগ্রেস ব্লক সভাপতি আমিরুল ইসলাম এক বেলার মধ্যে দল বদলে তৃণমূলের প্রার্থী হয়ে যাওয়ায় বিদ্রোহ করেছেন দলের সমশেরগঞ্জ ব্লকের প্রাক্তন পর্যবেক্ষক মন্টু। আমিরুলের যাত্রাভঙ্গ করতে নির্দল হিসেবে ভোটে লড়ছেন তিনি। ব্লকের অনেক তৃণমূল নেতা দল ছেড়ে তাঁর সমর্থনে প্রচারে নেমেছেন। ফলে চাপে পড়ে গিয়েছে তৃণমূল। মন্টু অনুগামী এক নেতার দাবি, ‘‘দলের বেশির ভাগ লোকজনই এখন আমাদের সঙ্গে। তাই ওরা প্রার্থীর উপরে হামলা চালাল।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সকালে এলিজাবেথ গ্রামে প্রচারে যাচ্ছিলেন মন্টু। কিন্তু ভাসাই পাইকর হাইস্কুলের কাছে জনাকয়েক দুষ্কৃতী লাঠিসোটা নিয়ে তাঁর গাড়ি আটকায়। তাদের হাতে ছুরিও ছিল বলে অভিযোগ। মন্টুর অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের বিরুদ্ধে কেন ভোটে দাঁড়িয়েছি, এই কৈফিয়ত তলব করে ওই দুষ্কৃতীরা। গাড়িতে এলোপাথারি লাঠির বাড়ি মারতে থাকে। কাচ ভেঙে যায়। পালানোর চেষ্টা করতেই ওরা আমায় চড়-কিল ও লাঠির বাড়ি মারতে থাকে। এর পরে আর প্রচার করলে প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে ওরা এলাকা ছাড়ে।’’
মন্টুর অভিযোগ, নির্দল প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড়ানোর পর থেকে নানা ভাবে তৃণমূলের লোকজন তাঁকে নিরস্ত্র করার চেষ্টা করে চলেছে। প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হলেও কোনও নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়নি। তাঁর দাবি, সমশেরগঞ্জে তৃণমূল হারবে বুঝেই পরিকল্পিত ভাবে এই হামলা চালানো হয়েছে। এই হামলার পিছনে তৃণমূল প্রার্থী আমিরুল ইসলামের মদত রয়েছে বলে তিনি নির্দিষ্ট করে অভিযোগ করেন। আমিরুল অবশ্য বলেন, “মানুষের সহানুভূতি পেতে মন্টুবাবু মিথ্যা অভিযোগ করছেন।’’
এ দিকে হামলার খবর পেয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে মন্টু-অনুগামীরা ঘটনাস্থলে চলে আসেন। পরে মন্টুবাবু সমশেরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ জানান। নালিশ জানানো হয়েছে নির্বাচন কমিশনের কাছেও। এ দিন বিকেলে ধুলিয়ানে হামলার প্রতিবাদে মন্টু-অনুগামীরা মিছিল বের করেন। ‘আক্রান্ত আমরা’ লেখা ফ্লেক্সে হামলায় আক্রান্ত ভাঙাচোরা গাড়ির ছবি টাঙানো ছিল। বিকেলের মিছিলে ব্লক তৃণমূলের অপসারিত সভাপতি কাউসার আলি ও সমশেরগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি তপন সরকারও ছিলেন। কাউসারও অভিযোগ করেন, “নির্বাচনী লড়াইয়ে এঁটে উঠতে না পেরে তৃণমূলের লোকজন হামলা চালাচ্ছে।’’