পুরনো কর্মীদের বিকল্প কাজ

ফাঁড়া কাটল রান্নার গ্যাসে, শুরু সরবরাহ

চুক্তির মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পর পুরনো নিরাপত্তা কর্মীদের সরিয়ে দেওয়া নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। তাঁদের বাধায় নতুন নিরাপত্তাকর্মীরা কাজে যোগ দিতে পারছিলেন না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কল্যাণী  শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২০ ০২:০১
Share:

—প্রতীকী চিত্র

টানা তিন দিন উৎপাদন বন্ধ থাকার পরে কল্যাণীর ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশেনের প্লান্টে অবশেষে জট কেটেছে। শনিবার নতুন নিরাপত্তা কর্মীরা প্লান্টের দায়িত্ব নেওয়ার পরে স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু হয়েছে।

Advertisement

চুক্তির মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পর পুরনো নিরাপত্তা কর্মীদের সরিয়ে দেওয়া নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। তাঁদের বাধায় নতুন নিরাপত্তাকর্মীরা কাজে যোগ দিতে পারছিলেন না। তৃণমূল প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি পুরনো কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। এর পরেই নিরাপত্তার অভাবে কর্তৃপক্ষ উৎপাদন বন্ধ করে দেন। ফলে নদিয়া ছাড়াও দুই ২৪ পরগনা ও মুর্শিদাবাদের বিস্তীর্ণ এলাকায় রান্নার গ্যাসের (এলপিজি) সরবরাহ সাময়িক ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।

জট কাটাতে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ইন্ডিয়ান অয়েল ও পুরনো কর্মীদের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেন কল্যাণী মহকুমাশাসক ধীমান বারুই। তাতেই জট খোলে। বৈঠকে ছিলেন আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি সুনীল তরফদার। তাঁর বক্তব্য, ‘‘নতুন সংস্থা কেন্দ্রের বেঁধে দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মীদের নিয়োগ করেছে। এ নিয়ে আপত্তি নেই। কিন্তু পুরনোদের কাজ হারানো নিয়ে আপত্তি ছিল। স্থির হয়েছে, পুরনো কর্মীদের প্লান্টের কোনও না কোনও কাজে লাগানো হবে।’’ মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘নিয়ম মেনেই নতুন সংস্থা নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ করেছে। সব সমস্যা মিটে কাজ শুরু হয়েছে।’’

Advertisement

ইন্ডিয়ান অয়েলে নিরাপত্তার জন্য প্রতি তিন বছর অন্তর ঠিকা সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়। গত ৩১ ডিসেম্বর পুরনো সংস্থার বরাত শেষ হয়েছে। ১ জানুয়ারি নতুন ঠিকা সংস্থার কর্মীরা কাজে যোগ দিতে গেলেই গোল বাধে। তাঁদের বাদ দেওয়া যাবে না বলে দাবি তুলে ৪০ জন পুরনো নিরাপত্তাকর্মী ও তাঁদের পরিবারের লোকজন প্লান্টের মূল ফটকের সামনে অবস্থানে বসেন। নতুন কর্মীরা কাজে যোগ দিতে না পারায় বন্ধ হয়ে যায় সিলিন্ডার ভরার কাজ। নদিয়ার এই প্লান্টে রোজ ৬০ হাজার সিলিন্ডার ভরা হয়। তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ডিস্ট্রিবিউটরেরা প্রমাদ গোনেন। তিন দিনেই নানা এলাকা থেকে গ্যাসের জোগানে টান পড়ার খবর আসতে থাকে।

ইন্ডিয়ান অয়েল সূত্রের খবর, পুরনো কর্মীদের প্লান্টের ভিতরে মাল ওঠানো-নামানো ও অন্য নানা কাজের জন্য নিযুক্ত ঠিকা সংস্থায় কাজ পেতে পারেন। যেহেতু তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে প্লান্ট সম্পর্কে অবহিত, তাঁদের কাজ দিলে ঠিকা সংস্থারও সুবিধা। সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার অভিজিত দে বলেন, ‘‘নতুন সংস্থার নিরাপত্তাকর্মীরা কাজে যোগ দিতে পেরেছেন, এটা ভাল খবর। পুরোদমে উৎপাদনও শুরু হয়ে গিয়েছে। আমরা বিভিন্ন ঠিকা সংস্থার কাছে পুরনো কর্মীদের নাম প্রস্তাব করব। বাকিটা নির্ভর করবে ঠিকা সংস্থার উপরে।’’

নদিয়া জেলা এলপিজি সরবরাহ অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক তথা কল্যাণী পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর বলরাম মাঝি বলেন, ‘‘আর কয়েক দিন অচলাবস্থা চললে পরিস্থিতি ভয়াবহ হত। লোকে রান্নার গ্যাস পেত না। অচলাবস্থা কেটে যাওয়ায় আমরা সকলেই হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন