প্রতীকী ছবি।
কোথাও নিকাশিনালা নেই, কোথাও আবার নালা রয়েছে কিন্তু তা পরিষ্কার হয় না। যে সব এলাকায় নিকাশিনালা নেই সেখানে বাড়িতে কলের ধারে বা শৌচালয়ের পাশে গর্তে জল জমছে। সেই জলে জন্মাচ্ছে মশার লার্ভা। একই ভাবে অপরিষ্কার নিকাশিনালা হয়ে উঠছে মশার আঁতুড়ঘর।
ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার মতো মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে পুরসভা ও স্বাস্থ্য দফতর কী ভাবে কাজ করছে তা খতিয়ে দেখতে গিয়ে এমনই সব অভিযোগ শুনলেন মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক পি উলগানাথন। গত বৃহস্পতিবার বহরমপুর পুরসভার চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যান-সহ পুর কর্তাদের সামনে বহরমপুর ১ নম্বর ওয়ার্ডে বাসিন্দারা জেলাশাসককে কাছে পেয়ে এমনই সব অভিযোগ উগরে দিয়েছেন। ওই দিন জেলাশাসক কিছু বাড়ি ঘুরেও পরিস্থিতি দেখেন।
প্রসঙ্গত, গত বছর বহরমপুরে ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা দিয়েছিল। ৩০ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। গত বছর মুর্শিদাবাদ জেলায় ১১৯৪ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ওই বছর ডেঙ্গিতে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। গত বছর ১৪৬২ জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। মারা গিয়েছিলেন ৩ জন। চলতি বছরে জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত ৬ জন ডেঙ্গিতে এবং ৭৩ জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার এলাকায় মশা ও লার্ভা মারার কাজ সরেজমিনে দেখতে গিয়ে খালি চোখেই জমা জলে লার্ভা চোখে পড়ে জেলাশাসকের। পুরকর্মী ও স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “নজরদারি চালালে এ ভাবে জল জমল কী করে? কী ব্যবস্থা নিয়েছেন?” উত্তর দিতে গিয়ে থতমত খান কর্মীরা। কিছু জায়গায় নিজে দাঁড়িয়ে থেকে জেলাশাসক নিকাশিনালা পরিষ্কার করান।
জেলাশাসক পুর চেয়ারম্যানকে বলেন, “শুধু বাইরে নিকাশিনালা দেখলে হবে না। বাড়িতে জমা জল আছে কিনা দেখতে হবে। বাসিন্দাদের বুঝিয়ে মশার বাসা নষ্ট করতে হবে।”
গত বছর নদিয়া জেলায় জেঙ্গির প্রকোপ এক লাফে অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল। ২০১৬ সালে জেলায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ১৬৮০ জনে। আর ২০১৭ সালের ৮ নভেম্বর পর্যন্ত সেই সংখ্যাটা এক লাফে বেড়ে হয় ৩২৭৫ জন। এ বার তাই রাজ্য সরকারে নির্দেশ পাওয়া মাত্রই জানুয়ারি মাস থেকেই ডেঙ্গি প্রতিরোধ অভিযানে নেমেছে জেলা প্রাশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর। জেলার ১১টি পুরসভা এলাকায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের নিয়ে তৈরি হয়েছে দল। তাঁরা বাড়ি-বাড়ি গিয়ে কোথাও জল জমে আছে কিনা, লার্ভা জন্মেছে কিনা তা দেখথেন। প্রতিদিন রিপোর্ট জমা পড়ছে সুপারভাইজারদের কাছে। সুপারভাইজাররা রিপোর্টের উপরে ভিত্তি করে বৈঠক করছেন পুরসভা।