অ্যাকাউন্ট সরাতে নির্দেশ

সমবায়ের শক্তিবৃদ্ধি চায় রাজ্য

জেলাশাসক জনান, জেলার সমবায় আন্দোলনকে শক্তিশালী করতেই ওই নির্দেশ জারি করেছেন তিনি।

Advertisement

বিমান হাজরা

শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৮ ০৭:২০
Share:

সমবায় ব্যাঙ্কগুলিকে চাঙ্গা করতে কিছু দিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারি কর্মীদের বেতন সেখান থেকে দেওয়ার করার কথা জানান। যেমন বলা, তেমনি কাজ। গত ৪ জুলাই বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে বিভিন্ন সরকারি দফতরের অ্যাকাউন্টগুলি সমবায় ব্যাঙ্কে সরিয়ে নিতে নির্দেশ জারি করেছেন মুর্শিদাবাদের জেলা শাসক পি উলগানাথন। এমনকী শিক্ষক-সহ সব সরকারি কর্মচারিদের বেতনের অ্যাকাউন্টও স্থানীয় সমবায় ব্যাঙ্কে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। মুর্শিদাবাদের ৭৮ টি সরকারি দফতরের জেলা আধিকারিকদের কাছে জেলা শাসক ওই নির্দেশ পাঠান। জেলাশাসক জনান, জেলার সমবায় আন্দোলনকে শক্তিশালী করতেই ওই নির্দেশ জারি করেছেন তিনি।

Advertisement

পদাধিকারবলে জেলাশাসক মুর্শিদাবাদ জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের স্পেশাল অফিসার হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন। জেলাশাসক বলছেন, ‘‘জেলার বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত, বিডিও, এসডিও-সহ সরকারি বিভিন্ন দফতরের কোনো অ্যাকাউন্ট নেই জেলার সমবায় ব্যাঙ্কের শাখাগুলিতে। ওই সমস্ত অ্যাকাউন্ট রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ব ও প্রাইভেট ব্যাঙ্কগুলিতে। বিভিন্ন সরকারি দফতরে যে বিশাল পরিমাণ অর্থ প্রতি দিন লেনদেন হয়, তা সমবায় ব্যাঙ্কগুলিতে হলে চাঙ্গা হবে সমবায় ব্যাঙ্ক।’’ প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুন রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায় বহরমপুরে এসে সমবায় ব্যাঙ্কগুলিতে জমার পরিমাণ বাড়াতে নির্দেশ দিয়ে যান। ঘোষণা করে যান জেলায় সমবায় ব্যাঙ্কের আরও ১৩০টি কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট খোলার কথা। তার পরেই জেলা শাসকের ওই নির্দেশ। এ দিকে জেলাশাসক ওই নির্দেশ জারি করার পরেই ‘দুর্ভোগ’ বাড়বে বলে আশঙ্কা সরকারি কর্মচারি থেকে শিক্ষক সকলের। এক প্রধান শিক্ষকের কথায়, “সমবায় ব্যাঙ্কের পরিকাঠামো খুবই দুর্বল। রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাঙ্কগুলি তার থেকে এগিয়েই শুধু নয়, যেকোনো ক্ষেত্রেই লেনদেন করা সহজ। এমনকী ইন্টারনেটে লেনদেনও সম্ভব হয়। কিন্তু জেলা ভিত্তিক সমবায় ব্যাঙ্কে তা কখনই সম্ভব নয়। ফলে দুর্ভোগ বাড়বে।” কৃষি দফতরের এক পদস্থ সরকারি কর্তা জানান, স্থানীয় সমবায় ব্যাঙ্কে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরের বিভাগীয় ডিপোজিটে অ্যাকাউন্টে লেনদেন নিয়েও অনেক ক্ষেত্রেই সমস্যায় পড়তে হবে। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আর্থিক কাজকর্মেও সমস্যা বাড়বে। তবে কিছু অ্যাকাউন্ট খোলা যেতেই পারে।

জেলাশাসক, রাজ্য সরকারের ওই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন বামফ্রন্ট আমলের মুর্শিদাবাদ জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের প্রাক্তন চেয়ারম্যান সমীরবরণ দত্ত। তিনি বলেন, ‘‘জেলাশাসকের ওই সিদ্ধান্তে সমবায় ব্যাঙ্ক শক্তিশালী হবে। ব বহু সরকারি কর্মীর অ্যাকাউন্ট রয়েছে সমবায় ব্যাঙ্কগুলিতে। তাঁরা ঋণ-সহ যাবতীয় বাড়তি নানা সুবিধাও পেয়ে থাকেন। ১৮টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সঙ্গে চুক্তি মত এটিএমও চালু আছে সমবায় ব্যাঙ্কে। সরকারি অর্থের কিছুটাও যদি সমবায় ব্যাঙ্কে জমা পড়ে তাতে সরকারের লাভ। কৃষিজীবী মানুষকে দেওয়া ঋণ পরিমাণ বাড়বে। ব্যাঙ্কের আমানত বাড়লে কৃষকদের বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির উপর নির্ভরশীলতা কমবে। সাময়িক সমস্যা হলেও ধীরে ধীরে তা কেটে যাবে। সমবায়ের ক্ষেত্রে এটা অত্যন্ত ভাল পদক্ষেপ।”

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন