প্রতীকী ছবি।
পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও সহকারী সভাপতি গঠন নিয়েও জটিলতা দেখা দিয়েছে বড়ঞা ব্লকে। ওই পঞ্চায়েত সমিতির ৩৭টি আসনের সব আসনেই বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল। তারপরেও সভাপতির আসন নিয়ে দলের নেতাদের সঙ্গে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের মনোমালিন্য শুরু হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে খবর।
ওই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির আসন ওবিসি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। দলীয় সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির দৌড়ে এগিয়ে আছেন তিন জন ওবিসি মহিলা— জামেলা বিবি, সানজেদা বিবি ও মহিলা তৃণমূলের নেত্রী টলি বিবি। টলি বিবি বছরভর দলীয় অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থাকেন। দলীয় সংগঠনের কাছে ব্লকের বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও ছুটতে হয় মহকুমা ও জেলা কমিটির বৈঠকে। তাঁর অনুগামীদের দাবি, টলি রাজনৈতিক ভাবে অভিজ্ঞ। আবার টলি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হলে দলের মহিলা সংগঠন কিছুটা হলেই নড়বড়ে হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন দলের নেতাদের একাংশ। ব্লক নেতৃত্বের একাংশ আবার জামেলা বিবিকে সভাপতি হিসাবে দেখতে চান। তবে দল এখনও পাকাপাকি সিদ্ধান্ত নেয়নি বলেই খবর।
ব্লক কমিটির এক নেতার কথায়, ‘‘ব্লক তৃণমূলের সভাপতির আত্মীয় সানজেদা বিবির দিকেই পাল্লা ভারী।’’ অন্য দিকে, ওই পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ব্লকের যুব তৃণমূলের সভাপতি মাহি আলম নিজেই। তাই সহকারী সভাপতি কি মাহি আলমই হচ্ছেন— সেই প্রশ্নও ভাসছে।
দলীয় সূত্রে খবর মাহি আলমের নেতৃত্বে বড়ঞায় যুব তৃণমূলের সংগঠন মজবুত হয়েছে। ফলে মাহি আলমকে সহকারী সভাপতি করা হবে কি না তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর, মাহিকে সহকারী সভাপতি করা না হলেও পঞ্চায়েত সমিতির গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হতে পারে। সেক্ষেত্রে সহকারী সভাপতি হিসাবে কার্তিক মণ্ডলকেও বেছে নেওয়া হতে পারে।
আজ, সোমবার ওই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গঠন। তাই দলীয় সদস্যেরা যাতে সদস্য কেনাবেচা বা ভোটাভুটিতে যোগ না দিতে পারেন সেটা মাথায় রেখে রবিবার সকাল থেকেই ৩৭জন সদস্যকে ব্লকের কুলির একটি বেসরকারি হোটেলে রাখা হয়েছে। সেখানে আছেন খোদ ব্লক সভাপতি গোলাম মুর্শিদ নিজেও। সবাই তো তৃণমূলের। তা হলে ক্যাম্পে রাখা হচ্ছে কেন? গোলাম মুর্শিদের দাবি, ‘‘আমাদের মধ্যে কোনও অশান্তি নেই। আসলে বোর্ড গঠনের আগে সবাই একসঙ্গে থাকলে নিজেদের মধ্যে পরিচিতি বাড়বে। পাশাপাশি সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে ব্লকেও যাওয়া যাবে।” আর সভাপতির আসন নিয়ে জটিলতা কি মিটেছে? গোলাম মুর্শিদ বলছেন, “ডানপন্থী দলে কিছুটা জটিলতা তো হবেই। আবার মিটেও যাবে। তবে সভাপতি কে হচ্ছে সেটা এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। আমি ব্লক কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে তিন জনের নাম পাঠিয়ে দিয়েছি। জেলার পর্যবেক্ষক যাঁর নাম পাঠাবেন, তিনিই সভাপতি হবেন।”
একই অবস্থা নবগ্রাম ও বেলডাঙাতেও। পঞ্চায়েত সমিতির মোট ২৮টি আসনের মধ্যে ২৮ টিতেই বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল। তার পরেও স্বস্তিতে নেই দলীয় নেতৃত্ব। তবে পুলিশ-প্রশাসন কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নয়। গন্ডগোল এড়াতে সোমবার নবগ্রাম বিডিও অফিস চত্বরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। সোমবার বেলডাঙা ১ পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠন। সেখানেও জারি থাকছে ১৪৪ ধারা।