দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে মোমবাতি মিছিল করলেন সৈকতের বন্ধু ও কৃষ্ণনাগরিকেরা। শুক্রবার। ছবি: প্রণব দেবনাথ
মাঝের দেড় ঘণ্টাই ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। ওই সময়ে কী করছিলেন গাড়ির লগ্নি সংস্থার কর্মী সৈকত ঘোষ, সেই উত্তরটা সৈকতের হত্যারহস্যের জট খুলতে তাঁদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, মোটরবাইকে শান্তিপুর থেকে কালীরহাট আসতে কোন ভাবেই দেড় ঘন্টা সময় লাগার কথা নয়। সংস্থার টাকা তোলার পরে এই সময়ে সৈকত যদি অন্য কারও সঙ্গে দেখা করে থাকেন তা হলে সেটা কী কারণে? কোন প্রয়োজনে? কে ছিলেন সেই ব্যক্তি? তাঁর সঙ্গে কি এই হত্যার কোনও যোগ রয়েছে? সিসি টিভি ফুটেজেও দেখা গিয়েছে, শান্তিপুরের দিক থেকেই এসেছিল আততায়ীদের মোটরবাইক।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের সামনে চারটি সম্ভাবনা উঠে আসছে। এক, প্রণয়ঘটিত কোনও সম্পর্ক নিয়ে টানাপোড়েন। দুই, পেশাগত ঈর্ষা। কারণ, অল্পদিনের মধ্যেই খুব ভাল কাজ করছিলেন সৈকত। সম্প্রতি তাঁর পদোন্নতিও হয়েছিল। তিন, সৈকতের কাছে থাকা টাকা হাতানোর জন্য কেউ হামলা করতে পারেন। এবং চার, লগ্নি সংস্থার অর্থ পরিষোধ করতে না-পেরে কেউ হামলা চালিয়েছে।
তদন্তে যে সব তথ্য উঠে আসছে তাতে মহিলা ঘটিত সমস্যার কথা একেবারে উড়িয়ে দিতে পারছে না তদন্তকারীরা। কৃষ্ণনগর শহরেরই এক মহিলার সঙ্গে সৈকতের সম্পর্কের কথা জানতে পেরেছে পুলিশ। সেই দিকটাও অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখছে তারা। গত তিন-চার মাসে সৈকত কোন কোন ব্যক্তির সঙ্গে সংস্থার তরফে আর্থিক লেনদেন চালিয়েছিলেন এবং তাঁর উপরে কার-কার থেকে টাকা আদায়ের দায়িত্ব ছিল তা-ও দেখা হচ্ছে। ওই গাড়ির অর্থলগ্নি সংস্থার একাধিক কর্মীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
অর্থলগ্নি সংস্থার কর্মী খুনের উদাহরণ নদিয়ায় আগেও আছে। চাকদহের বাসিন্দা পার্থ চক্রবর্তী নামে এক যুবক হাওড়ার ডোমজুড়ে একটি অর্থলগ্নি সংস্থার কর্মরত ছিলেন। টাকা আদায়ে গিয়ে ঋণগ্রহীতার হাতে তাঁকে খুন হতে হয়।
অন্য দিকে, শুক্রবার সৈকত ঘোষের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করার দাবিতে তাঁর পাড়া-প্রতিবেশি, আত্মীয় ও বন্ধুবান্ধবেরা শুক্রবার ঘূর্ণী থেকে কোতোয়ালি থানা পর্যন্ত মোমবাতি মিছিল করেন।