মায়ের সঙ্গে আফিফ। —নিজস্ব চিত্র।
এক কোটি দশ লাখ— ঠোঁটের কোণায় এখনই আত্মবিশ্বাস খেলে যাচ্ছে তাঁর।
গুগল-এ সম্বৎসরের প্যাকেজে কোটিপতি হয়ে, স্বপ্ন-টপ্ন নয়, বরং আরও বেশি হিসেবী হয়ে উঠেছেন আফিফ আহমেদ।
সদ্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা ছেলেটি প্রথম চাকরিতেই কোটি টাকা মাইনে পাওয়ায় বাড়ির লোক উচ্ছ্বাস ঢাকতে পারছেন না ঠিকই, তবে আফিফের সে সবে বিশেষ হেলদোল চোখে পড়ছে না। বরং বলছেন, ‘‘সিঙ্গাপুরে থাকতে গেলে যা খরচ না, ভাবতেই পারবেন না। ওই টাকা ওখানে কিছুই না!’’
কম্পিউটার বিজ্ঞান নিয়ে পাশ করে প্রথম ক্যাম্পাসিং-এই পাহাড় ছোঁয়ার উচ্ছলতা দূরের কথা বরং মাপা শব্দে বলছেন, ‘‘মাইনের অঙ্কটা বড় কথা নয়, আমি গর্বিত গুগুলের মত একটি সংস্থা আমাকে কাজের সুযোগ দিয়েছে বলে।’’
গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে অন-লাইনে পরীক্ষা দিয়েছিল আফিফ। পরীক্ষায় ৪৫ নম্বরে ঠাঁই হয়েছিল তার। অক্টোবরে ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাক পড়েছিল বেঙ্গালুরুতে। ইন্টারভিউয়ে গুগুল কর্তৃপক্ষ তাঁর কাছে জানতে চান, বাইরে কাজ করতে অসুবিধা আছে? আফিফ জানিয়ে দেয় — না, নেই। আপাতত তাই সিঙ্গাপুরের অফিসে যোগ দিতে বলা হয়েছে তাকে। তবে আফিফের লক্ষ্য ক্যালির্ফোনিয়া।
কৃষ্ণনগর শহরের একেবারেই সাধারণ পরিবারের ছেলে আফিফ। বাবা আসরফউদ্দিন আহমেদ কৃষ্ণনগর আদালতের ‘ইনকাম ট্যাক্স’ এর আইনজীবী। মা আমবারিন আহমেদ নিতান্তই হেঁশেল সামলান। তাঁর পরিজনেরা জানান, ছোট বেলা থেকেই আফিফ পড়াশুনো নিয়েই থাকতে পছন্দ করত। কৃষ্ণনগরের বিশপমরো স্কুলে থেকে ৯২ শতাংশ নম্বর পেয়ে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময় থেকেই সে নিজেকে তৈরি করতে থাকে। আমবারিন বলেন, ‘‘আসলে ছোটবেলা থেকেই আফিফ একমনে পড়াশুনোটাই করে এসেছে। বাইরে ঝড় বয়ে গেলেও টের পেত না।’’ আর তাই কী আফিফ বলছেন, ‘‘যাদবপুরে গিয়ে বুঝেছি ছাত্র রাজনীতি আসলে ফাঁপা।’’