ঘটনাস্থল: খানিক বাদে এখানেই আক্রান্ত হন সাংবাদিক সৌমিত্র সিকদার। নিজস্ব চিত্র
মদ খাওয়াকে কেন্দ্র করে এলাকায় গোলমাল। তার পর সেই মদ্যপদের হাতেই মার খেয়ে লুটিয়ে পড়েন স্থানীয় এক যুবক। এই ঘটনায় যে ৬ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে তাদের মধ্যে ৪ জনকে পুলিশ কেন ধরতে পারছে না প্রশ্ন তুলে বৃহস্পতিবার সকালে প্রায় ঘণ্টা দু’য়েক থানার সামনে শহরের ব্যস্ত তিন রাস্তার মোড় অবরোধ করে আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত চাকদহ পৌর কর্মচারী কল্যাণ সমিতি। চলে পুলিশ-বিরোধী স্লোগান এবং বিক্ষোভ। তুমুল যানযটে নাকাল হন সাধারণ মানুষ।
গোলমালের সূত্রপাত বুধবার রাতে। চাকদহ রাজবাগানপাড়া এলাকায় মদ খাওয়াকে কেন্দ্র করেই এক দল দুষ্কৃতীর মধ্যে গোলমাল বাধে। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এলাকায় দুষ্কৃতীরা প্রায়ই মদ খেয়ে চিৎকার-চেচামেচি করে। তাদের তাণ্ডবে এলাকার পরিবেশ ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। বুধবার গোলমালের খবর পেয়ে পুলিশ আসতেই মদ্যপেরা গা ঢাকা দেয়। পুলিশ চলে যাওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যে ফের তারা আসে এবং স্বমূর্তি ধরে বলে অভিযোগ। সে সময় দীপক পোদ্দার নামে ওই পুরকর্মী গোলমাল থামাতে যান। অভিযোগ, তাঁকে বেধড়ক মারধর করে দুষ্কৃতীরা। মাথায় আঘাত পেয়ে লুটিয়ে পড়েন। তাঁকে চাকদহ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দীপকবাবুর স্ত্রী আশা বলেন, ‘‘আমার স্বামী দোকানে যাচ্ছিলেন। ওই ছেলেগুলি প্রায়ই মদ খেয়ে পাড়ায় গোলমাল করে। উনি ওদের কাজকর্মের প্রতিবাদ জানালে মারা হয়। দোষীদের শাস্তি চাই।”
প্রত্যাক্ষদর্শীদের মতে, নীলরতন মণ্ডল ওরফে বাবু নামে এক যুবক দীপক পোদ্দারের মাথায় আঘাত করে। ৬ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়। পুলিশ ফের ঘটনাস্থলে গিয়ে বাবু-সহ ১২ জনকে আটক করে আনে। পরে তাদের প্রত্যেককে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু যাদের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছিল তাদের ২ জন ধৃতদের মধ্যে ছিল। বাকি ৪ জন পলাতক। ওই ৪ জনকে ধরার দাবিতে বৃহস্পতিবার সকালে অবরোধ বিক্ষোভ করে চাকদহ পৌর কর্মচারী কল্যাণ সমিতি। দীপকবাবু তাঁদের সমিতির সদস্য ছিলেন। তিনি টোল আদায়ের কাজ করতেন। পুলিশ জানিয়েছে, পলাতকদের খোঁজ চলছে।
এ দিন সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ নাগাদ প্রায় শতাধিক বিক্ষোভকারী চাকদহ থানার সামনে রাস্তার উপর বসে পড়েন ও বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। টুকটুকে মাইক বেঁধে চলতে থাকে স্লোগান। এলাকার মানুষের একাংশের অবশ্য অভিযোগ, পুরকর্মীদের অবস্থান বিক্ষোভে বেশ কিছু দুষ্কৃতী ও দাগী অপরাধীকে দেখা গিয়েছে যারা এলাকায় মস্তান, তোলাবাজ হিসাবে পরিচিত। এদের কয়েক জন আবার জামিনে মুক্ত রয়েছেন। বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ অবরোধ ওঠে।