ট্রেন-বাস ভর্তি ভিড়ে
CPM

ব্রিগেড ভরাতে লাল ঝান্ডা, হাত একসঙ্গে

আজকের সমাবেশের প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল মাস দু’য়েক আগে থেকেই। পথসভা, পদযাত্রা, মশাল মিছিল করে বামেদের কর্মী সমর্থকদের উজ্জীবিত করার সেই শুরু।

Advertisement

বিদ্যুৎ মৈত্র

বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৫:১০
Share:

প্রতীকী ছবি।

প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য উপস্থিত থাকুন আর না থাকুন পরিবহণ সঙ্কট কাটিয়ে আজ রবিবার ভোর থেকেই ট্রেনে বাসে করে ব্রিগেডের সমাবেশে যোগ দিতে রওনা দিলেন মুর্শিদাবাদ জেলার বাম কংগ্রেস নেতা, কর্মী সমর্থকরা। চাকরি ও অন্যান্য দাবিতে বামেদের লেখা নয়া স্লোগান ‘লাল ফেরাও হাল ফেরাও’ দিতে দিতে শুক্রবার বিকেল থেকেই কলকাতামুখী হল কাস্তে হাতুড়ি তারার সমর্থকরা। ‘ওদের কাজ কাটমানি আর তোলাবাজি/আমরা চাই পেটে ভাত আর রুটি রুজি’ বলতে বলতে ওদের সঙ্গ দিল কংগ্রেসের ছাত্র-যুবরা। শনিবার বিকেলের হাজারদুয়ারি এক্সপ্রেস থেকে রাতের ট্রেন এমনকি বাস, সব জায়গাতেই নজরে পড়েছে লাল ও তে-রঙা পতাকা বাহকদের একসঙ্গে।

Advertisement

কোথাও কোথাও লাল ঝান্ডা ধরেছে কংগ্রেস সমর্থকেরা তেমনই কংগ্রেসের হাত ধরেছে বামেরা। মাঝেমাঝেই অবশ্য কর্মীদের মুখে মুখে ঘুরেছে ‘খেলা হবে’ শ্লোগান। দুই দলের ছাত্র যুবদের কাছে এখনও নবান্নের স্মৃতি টাটকা। এক বাম যুবনেতার দাবি, “সেই স্মৃতি সঙ্গে করে এই সমাবেশ থেকে ফিরেই জেলায় ভোটের লড়াইতে যৌথ ভাবে নামবে বাম কংগ্রেস।”

জোটের আসন বণ্টন অবশ্য এখনও চূড়ান্ত হয়নি তিন দলের মাথাদের একাধিক বৈঠকেও। সরকারি ভাবে ঘোষণা হয়নি জেলার ২২ আসনের কোন আসন কারা লড়বে। আবার জেলার অন্যত্র ইতিউতি বাম কংগ্রেস নেতারা যৌথ কর্মসূচিতে শামিল হলেও এখনও সদর শহর পরিক্রমা করেনি বাম কংগ্রেসের যৌথ মিছিল। তার মধ্যেই ব্রিগেডের ডাকে সাড়া দিয়ে কলকাতা গেলেন দুই দলের নেতা কর্মীরা।

Advertisement

অতীতেও ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে বামেদের সমাবেশ হয়েছে। কিন্তু সেই সময় ব্রিগেড জমায়েত নিয়ে ভাবতে হত না বামেদের। একথা তাদের নয়া জোট সঙ্গী কংগ্রেসের নেতারাও দাবি করেন অহরহ। তবে এ বার ব্যতিক্রম। যদিও জেলার এক প্রবীণ বাম নেতার দাবি, “ব্রিগেডের জমায়েতে অংশ নিতে কর্মীদের উৎসাহ উদ্দীপনা চিরকালই বেশি। বাম শাসনকালেও সবাইকে সেই জমায়েতে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হত না যানবাহনের সঙ্কটের কারণেই।” তার উপরে এ বার বামেদের সঙ্গে তাদের দোসর কংগ্রেসও একই দিনে ব্রিগেডমুখী হওয়ায় দুই দলের কর্মী সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি হয়েছে বলে দাবি ওই নেতার।

তবে আজকের সমাবেশের প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল মাস দু’য়েক আগে থেকেই। পথসভা, পদযাত্রা, মশাল মিছিল করে বামেদের কর্মী সমর্থকদের উজ্জীবিত করার সেই শুরু। শনিবার জেলার ২৬ ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় বাসযাত্রীরা নিজেদের খাওয়ার ব্যবস্থা করতে বাড়ি বাড়ি চাল আলু ডিম জোগাড় করা হয়েছে বলে বাম যুব নেতাদের দাবি। শনিবার রাতে বাড়ি থেকে খাওয়া দাওয়া করে বাসে করে আজ সকালে যারা কলকাতা পৌঁছেছেন তাঁরা সেই সব রান্না করে খেয়ে দেয়ে ব্রিগেডের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন সকাল দশটার মধ্যে, জানান বাম যুবনেতা ধ্রুবজ্যোতি সাহা।

পিছিয়ে নেই কংগ্রেসও। দলের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, “ব্রিগেড সমাবেশকে সফল করতে আমাদের কর্মীরা বাস ট্রেন ছোট গাড়িতে অনেকেই রওনা দিয়েছেন। পর্যাপ্ত গাড়ি না পেলেও সমাবেশে যাওয়া আটকাবে না কিছুতেই। তার জন্য সব রকম ভাবেই প্রস্তুতি নিয়েছে আমাদের কর্মী সমর্থকরা।”

যদিও দুই দলের যৌথ কর্মসূচিকে টিপ্পনী কেটেছে শাসক দল তৃণমূল ও বিজেপি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের এক যুব নেতা বলেন “একই বাস ট্রেনে গেলে তো একই সঙ্গে ব্যানার পোস্টার যাবে তাতে কি বোঝায় ওরা যৌথ ভাবে ব্রিগেড গেল?”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন