নুন আনতে পান্তা ফুরানো দিন যাপনে স্ত্রী-পুত্র নিয়ে তিন জনের সংসার টানতেই নড়বড়ে অবস্থার মধ্যেই বিশ্বরূপ দাসের স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। নিতান্তই জ্বর-সর্দি-কাশি নিয়ে স্ত্রী সোনালিকে তিনি ভর্তি করেছিলেন জেলা হাসপাতালে। তার পর শুরু হয়েছিল ‘রেফার রোগ’।
আর সেই রোগেই জেলা থেকে কলকাতার সরকারি হাসপাতালে পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি। বেড না পাওয়ায় সেখান থেকে খান দুয়েক বেসরকারি হাসপাতালে। বিল হয়েছিল সাড়ে ছ-লক্ষ টাকা। তবে তাতেও রোগ সারেনি। ‘ভুল’ চিকিৎসার অভিযোগ তুলে তাই ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ
হয়েছেন বিশ্বরূপ।
আদালতের রেজিষ্টার কৌশিক বড়াল বলেন, ‘‘মামলাটি গ্রহণ করা হয়েছে।’’ সেই সঙ্গে অভিযুক্ত দুই হাসপাতাল এবং এক চিকিৎসককে আদালত শো-কজ করেছে। মামলার শুনানি ৬ এপ্রিল। গত জুলাই মাসে জ্বর-সর্দি নিয়ে সোনালিকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে ভর্তি করান বিশ্বরূপ। আট দিন ভর্তি থাকার পর তাঁকে কলকাতায় এসএসকেএমে ‘রেফার’ করা হয় ২৬ জুলাই।
বিশ্বরূপ বলেন, ‘‘গেলাম বটে, তবে, এসএসকেএমে বেড পেলাম না। রওনা দিয়েছিলাম বহরমপুরের দিকে। মাঝ পথে সোনালি আরও অসুস্থ হয়ে পড়ায় কৃষ্ণনগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করি।’’
সেখানে সঙ্গে সঙ্গেই রোগীকে ‘ভেন্টিলেশন’ দেওয়া হয়। তিন দিন রেখে বিল ধরানো হয় এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা। বিশ্বরূপ বলেন, ‘‘কোনওক্রমে বিল মিটিয়ে ৩০ জুলাই বহরমপুরে এনে সোনালিকে ভর্তি করি অন্য একটি নার্সিংহোমে।’’
বিশ্বরূপ বলেন, ‘‘এর পর ওই হাসপাতালের চিকিৎসক অরবিন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘রুগি আর আড়াই মাস বাঁচবে।’’ এ বার বিল হয়, ৫.৬৭ লক্ষ টাকা। তবে, ‘শেষ চেষ্টা’ হিসেবে বিশ্বরূপ স্ত্রীকে বেঙ্গালুরুর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে মাত্র পাঁচ দিনে সুস্থ হন তিনি।