কয়েল থেকে আগুন নেভাতেই দেড় ঘণ্টা

বাগড়ির আঁচ থিতিয়ে যাওয়ার আগেই তাপ ছড়িয়েছিল কলকাতার মেডিক্যাল কলেজে, আর সেই উত্তাপে আশঙ্কা ছড়িয়েছে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে।  কান্দি মহকুমা হাসপাতালের অন্দরে পা রাখলেই সেই আঁচ বুঝি টের পাওয়া যাচ্ছে।

Advertisement

কৌশিক সাহা

কান্দি শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৮ ০১:২১
Share:

কান্দি মহকুমা হাসপাালে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন।

বাগড়ির আঁচ থিতিয়ে যাওয়ার আগেই তাপ ছড়িয়েছিল কলকাতার মেডিক্যাল কলেজে, আর সেই উত্তাপে আশঙ্কা ছড়িয়েছে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে।
কান্দি মহকুমা হাসপাতালের অন্দরে পা রাখলেই সেই আঁচ বুঝি টের পাওয়া যাচ্ছে।
হাসপাতালের তাবড় কর্তারা অবশ্য বলছেন, ‘‘না না ভয় পাওয়ার কিচ্ছু নেই। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে আগুন লাগার পরে সব হাসপাতালেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’ কিন্তু সেই অভয়ের অন্দরে পা দিলেই মালুম হচ্ছে, ভয়টা অমূলক নয়।
আসুন, হাসপাতালের করিডর ধরে একটু হেঁটে আসি। আউটডোরের আশপাশে ইঁদুর-বেড়ালের হুটোপুটি, ভাঙা সিরিঞ্জ, ঘরের কোনায় জমে থাকা শুকনো রক্ত লাগা নেকড়া— এ সবই যেমন ছিল তেমনই রয়েছে। নেই শুধু অগ্নি নির্বাপক কোনও ব্যবস্থা। হাসপাতালের কোথাও ফায়ার অ্যালার্ম নেই, ফলে কোনও ওয়ার্ডে আগুন লাগলে অন্যত্র সজাগ হওয়ার সুযোগ নেই বললেই চলে। বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজে অগ্নিকাণ্ডের পরে স্বাস্থ্য কর্তাদের একের পর এক বৈঠক, সিদ্ধান্ত কম হয়নি— বলা হয়েছিল, জেলার সব হাসপাতালেই জলের লাইন পৌঁছে দেওয়া হবে। তীব্র গতিতে জল ছিটকে নিভিয়ে দেবে আগুন। সেই সিদ্ধান্ত এখনও খাতায় কলমে। হাসপাতালের কোথাও চোখে পড়বে না ফায়ার এক্সটিঙ্গুইসারও। ফলে আগুন লাগলে এখনও সেই দমকলের ইঞ্জিনের জন্য হা পিত্যেশ করে বসে থাকার পুরনো রেওয়াজ থেকে এতটুকু সরেনি মহকুমা হাসপাতালগুলি।
কান্দি মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে বড় কোনও জলাধার নেই, দমকলের ইঞ্জিন পৌঁছলেও জলের জন্য হাঁ করে বসে থাকা ছাড়া গতি নেই। নেই’য়ের সেই তালিকায় রয়েছে আরও অনেক কিছু, আপতকালীন সিঁড়ি, পুরনো বিদ্যুতের তারে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ অভাব, নিদেনপক্ষে সাবেক কালের বালির বালতি, নাহ্ কিচ্ছু নেই। আর নেই বলেই গত জানুয়ারির শীতে এই হাসপাতালের অগ্নিকাণ্ডের স্মৃতিতে এখনও চমকে ওঠেন অনুপম দাস। বলছেন, ‘‘সে দিন রাতে যে ঘরে আগুন লেগেছিল তা রোগীদের বেডের কাছ পর্যন্ত পৌঁছতে পারত না কিন্তু রোগীদের আতঙ্ক দেখে মনে হয়েছিল অনেকেই মারা যাবে। হাসপাতালের মধ্যে মশা মারার কয়েল জ্বলছিল তা থেকেই আগুন ছড়িয়েছিল মোবাইলের তারে। নিমেষে হুহু ধোঁয়া। এত অগোছাল যে এটুকু আগুন নেভাতেই দেড় ঘণ্টা লেগেছিল।’’
হাসপাতালের সুপার মহেন্দ্রনাথ মাণ্ডি বলেন, “ও সব বাজে কথা, এ খানে আগুন নেভানোর সব ব্যবস্থাই আছে।’’ কিন্তু কি সে ব্যবস্থা? তার কোনও সদুত্তর মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন