সব্জি বাজারের উদ্বোধনে বিধায়ক সুব্রত সাহা। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়।
এতদিন বিক্রেতেরা আনাজ নিয়ে বসতেন রেললাইনের ধারে, সড়কের পাশে। মাথার উপর ছাদ না থাকায় রোদে-জলে ভরসা ছিল ফুটিফাটা ছাতা অথবা ফিনফিনে পলিথিনের অক্ষম আড়াল। এ বার সে সব দিন শেষ। বৃহস্পতিবার থেকে চালু হল প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪ একর জায়গা জুড়ে গড়ে ওঠা ঝাঁ-চকচকে সাগরদিঘি কৃষি বাজার।
বাজার দেখে চোখের পলক পড়ছে না সব্জি বিক্রেতা পোপাড়ার হাসিবুর রহমান, বাবু শেখদের। তাঁদের কথায়, ‘‘এতদিনে মাথার উপর ছাদ জুটল। পায়ের তলার প্যাচপ্যাচে কাদার বদলে ঝা চকচকে ঢালাই মেঝে পেলাম।’’ তাঁদের কথায়, ‘‘ফুটপাতের বাজারে যানবাহনের দাপটে শাক-সবজি ধুলো কাদায় মাখামাখি হত। উঁচু পাচিল ঘেরা কৃষক বাজারে তার হাত থেকেও রেহাই পাওয়া গেল।’’
এ দিনের অনুষ্ঠানে স্থানীয় বিধায়ক তৃণমূলের সুব্রত সাহা বলেন, ‘‘ফড়েদের জন্য ফসলের ন্যায্য দাম পান না চাষি। উল্টে চড়া দামে সব্জি কিনতে হয় গৃহস্থকে। তার থেকে চাষিকে বাঁচাতে এই বাজার গড়া হয়েছে।’’ মুর্শিদাবাদ জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, ‘‘টাটকা সব্জি নিয়ে ভোরে বাজারে পৌঁছে যাবেন চাষিরা। ক্রেতা সরাসরি তাঁদের থেকে সেই সব্জি কিনবেন। ফলে চাষি যেমন বেশি পয়সা পাবেন তেমনি ক্রেতাও চড়া দাম থেকে রেহাই পাবেন। পাবেন সতেজ সব্জি।’’
জেলাশাসকের মতে ওই প্রকল্পের নাম ‘চাষির সাথে ক্রেতার পাশে।’ প্রকল্প সফল করতে এ দিনের অনুষ্ঠান থেকে পুলিশ সুপার সি সুধাকরের ঘোষণা, ‘‘প্রকল্প ভেস্তে দিতে দালালরা সচেষ্ট হলে আমাদের জানাবেন। পুলিশ আপনাদের পাশে থাকবে। ব্যবস্থা নেব। নইলে চাষি বাঁচবে না।’’
ওই বাজারে ‘খোলাবাজার’ ও ‘নিলাম বাজার’-এর রয়েছে মোট ৬৮টি স্টল। সেই স্টলগুলির ৩ ফুট উঁচুতে কংক্রিট ঢালাই পাটাতনের উপরে সব্জি রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওজনে কারচুপি আটকাতে দেওয়া হয়েছে বৈদ্যুতিন ওজন যন্ত্র।