কেরলে কাজে গিয়ে আর বাড়ি ফিরলেন না নারায়ণ

গন্তব্যে পৌঁছনোর আগেই ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু হল মুরুটিয়ার বালিয়াডাঙা ঠাকুরপাড়ার বাসিন্দা নারায়ণ ঝাঁয়ের (৪৬)। পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় দিনমজুর নারায়ণের পরিবার থাকে টিনের চালা ও পাটকাঠির বেড়া দেওয়া এক চিলতে ঘরে। ৭০ বছরের বৃদ্ধা মা, স্ত্রী ও ছ’বছরের এক মেয়ে রয়েছে তাঁর পরিবারে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মুরুটিয়া শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৮ ০১:২৫
Share:

ভেঙে পড়ছেন আত্মীয়েরা। ইনসেটে, নারায়ণ।

বাড়ি থেকে যাওয়ার সময় স্ত্রীকে বলে গিয়েছিলেন, “কেরলে কাজে যাচ্ছি, এর পর থেকে সংসারে আর অভাব থাকবে না।” কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণ হল না।

Advertisement

গন্তব্যে পৌঁছনোর আগেই ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু হল মুরুটিয়ার বালিয়াডাঙা ঠাকুরপাড়ার বাসিন্দা নারায়ণ ঝাঁয়ের (৪৬)। পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় দিনমজুর নারায়ণের পরিবার থাকে টিনের চালা ও পাটকাঠির বেড়া দেওয়া এক চিলতে ঘরে। ৭০ বছরের বৃদ্ধা মা, স্ত্রী ও ছ’বছরের এক মেয়ে রয়েছে তাঁর পরিবারে।

গ্রামে এত দিন তিনি দিনমজুরির কাজ করতেন। কিন্তু অভাবের সংসারে হাল ফেরাতে ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে টাকা রোজগারের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এ জন্য কেরলে কর্মরত গ্রামের আর এক বাসিন্দা সমীর হালদারের সঙ্গে কথা বলে সেখানে যাচ্ছিলেন। পথে তামিলনাড়ুর সালেম স্টেশনে ট্রেনে কাটা পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে মঙ্গলবার বিকেলে বাড়িতে খবর আসে। তারপর থেকে শোকে ভেঙে পড়েছে পরিবার ও আত্মীয় স্বজনরা। এলাকার মানুষের কাছে চাঁদা তুলে বুধবার পরিবারের লোকজন দেহ আনার জন্য রওনা দিয়েছেন। এ দিন ঘরের বারান্দায় বসে মৃতের স্ত্রী ডলি ঝাঁ বলেন, “স্বামীই পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ছিলেন। তাঁর অবর্তমানে ছোট মেয়ে আর বৃদ্ধা শাশুড়িকে নিয়ে এখন আমাদের সংসার কী ভাবে চলবে, তা জানি না।’’

Advertisement

করিমপুর ২ বিডিও সত্যজিৎ কুমার বলেন, ‘‘প্রশাসনের উদ্যোগে সরকারি খরচে মৃতদেহ ফিরিয়ে আনা হবে। সরকারের সমব্যথী প্রকল্পের অর্থ সাহায্য করা হবে এবং ওই পরিবারকে সরকারি ভাবে বার্ধক্য ভাতা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।’’ করিমপুরের বিধায়ক মহুয়া মৈত্র বলেন, সালেম স্টেশনের রেল পুলিশের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। সেখানে বাড়ির লোকজন পৌঁছলে দেহ ময়নাতদন্তের পরে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।’’ মৃতের দেহ ট্রেনে হাওড়া এবং পরে সেখান থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে নদিয়া জেলা প্রশাসন। নিজস্ব চিত্র

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন