উদ্বোধনের ফলক পড়ে। হয়নি স্ট্যান্ড।— নিজস্ব চিত্র।
কোর্ট চত্বরে সাইকেল রেখে উকিলের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলেন বছর তিরিশের এক যুবক। কিছু সময় পরে ফিরে এসে দেখেন সাইকেলটা নেই। বিস্তর খোঁজাখুঁজির পরেও সাইকেলের সন্ধান না পেয়ে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘সাইকেলে চাবি দিয়ে গিয়েছিলাম। তারপরেও চুরি হয়ে গেল! ভাবতেই পারছি না!’’
কৃষ্ণনগর জেলা আদালতে এমন ঘটনা প্রথম নয়। এমনটা হয়েছে অন্য বিচারপ্রার্থী থেকে শুরু করে আইনজীবী, ল’ক্লার্কের সঙ্গেও। মোটর বাইক চুরির নজিরও রয়েছে।
এ নিয়ে একাধিকবার আবেদন করার পরেও এখনও পর্যন্ত আদালত চত্বরে গ্যারাজ তৈরি হয়নি। গ্যারাজ না থাকার কারণে সকলেই যেখানে সেখানে সাইকেল রাখতে বাধ্য হন। নজরদারি না থাকার ফলে চুরির সুযোগ তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। শুধু চুরি নয়, ছড়িয়ে-ছিটিয়ে সাইকেল, মোটর বাইক রাখার ফলে সমস্যা হচ্ছে চলাফেরাতেও। সদর শহরে জেলা আদালত হওয়ায় প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ আদালতে আসেন। দূরের অনেকে আসেন মোটর বাইক, গাড়িতে। আবার শহরের মানুষ, কর্মী, আইনজীবীরা আসেন সাইকেলে। সব মিলিয়ে ফৌজদারি আদালতের একমাত্র দরজার সামনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে প্রচুর সাইকেল, বাইক। কৃষ্ণনগরের চারটি বার অ্যাসোসিয়েনের যুগ্ম সংগঠন ফেডারেশন অফ বার অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক দেবাশিস রায় সমস্যার কথা মানছেন। তিনি বলেন, ‘‘সাইকেল গ্যারাজ না থাকায় মানুষকে চরম হয়রানির শিকার হতে হয়। কোনও কোনও রাস্তা দিয়ে হাঁটাই দায় হয়ে পড়ে।’’ তাঁর কথায়, একবার আদালতের কর্মীদের উদ্যোগে সাইকেল গ্যারাজের শিলান্যাস হয়েছিল। তারপরে আর কিছু হয়নি। একাধিকবার গ্যারাজের জন্য আবেদন করলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি বলে অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘‘হাইকোর্টেও আবেদন জানিয়েও কাজ হয়নি!’’
একই কথা শুনিয়েছেন ওয়েস্টবেঙ্গল কোর্ট এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের কৃষ্ণনগর শাখার সভাপতি দীপেন্দ্রনাথ পাল। তাঁর কথায়, ১৯৯৬ সালে গ্যারাজের জন্য জায়গাও দেওয়া হয়েছিল। ওই বছরে শিলান্যাসও করা হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয়নি। কিন্তু আদালতে তো প্রচুর পুলিশ থাকে। সাইকেল চুরি হয় কী ভাবে? উপস্থিত পুলিশকর্মীদের সাফাই, ‘‘যাঁরা আদালতে আসেন, তাঁরা ব্যস্ত থাকেন। দুঃশ্চিন্তাও থাকে। সেটা কাজে লাগায় দুষ্কৃীতারা।’’
আর আপনারা? মেলেনি জবাব।