যন্ত্র আছে যন্ত্রী নেই, হাসপাতালে বন্ধ এক্স-রে

যন্ত্র রয়েছে, একাধিক। কিন্তু যন্ত্রী কোথায়! ফলে সে যন্ত্র চলে না। আর এতেই বিপাকে পড়ছেন রোগীরা। কান্দি মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসক-নার্সের সংখ্যা কম। তার সঙ্গে নেই টেকনিশিয়ান। ফলে হাসপাতালে এক্স-রে পরিষেবা মিলছে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কান্দি শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৬ ০১:০২
Share:

যন্ত্র রয়েছে, একাধিক। কিন্তু যন্ত্রী কোথায়! ফলে সে যন্ত্র চলে না। আর এতেই বিপাকে পড়ছেন রোগীরা। কান্দি মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসক-নার্সের সংখ্যা কম। তার সঙ্গে নেই টেকনিশিয়ান। ফলে হাসপাতালে এক্স-রে পরিষেবা মিলছে না।

Advertisement

সমস্যাটা বেশ কয়েকমাসের। কিন্তু তার কোনও প্রতিকার হচ্ছে না। ফলে বিপিএল তালিকাভূক্ত রোগীরা গাঁটের টাকা খরচ করে এখন বাইরে থেকে এক্স-রে করাতে বাধ্য হচ্ছেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালে ব্লাড ব্যাঙ্কে তিন জন কর্মী থাকার কথা। কিন্তু রয়েছেন দু’জন। একটি পদ ফাঁকা। অনেক সময় রক্ত পরীক্ষা করাতে এসে লোকজনকে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। নমুনা পরীক্ষা কেন্দ্রও কর্মী-সঙ্কটে ভুগছে। নানা হ্যাপা সেরে রক্ত পরীক্ষা করানোর পর ঠিক সময়ে রিপোর্ট পাচ্ছেন না রোগীরা। আর রিপোর্ট ঘুরে যাচ্ছে মাস।

Advertisement

একই ভাবে ওই হাসপাতালের বর্হিবিভাগে প্রতি দিন অন্তত সাতশো রোগী ভিড় করেন। মায়ের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করার জন্য হাসপাতালে এসেছিলেন খড়গ্রামের বাসিন্দা জামির মিঁঞা। তিনি বলেন, “দু’দিন ধরে রক্তের নমুনার রিপোর্ট পাচ্ছিলাম না। তাই চিকিৎসকেরা ঠিক মতো চিকিৎসাও শুরু করতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে আমি বাইরে থেকে প্রায় তিনশো টাকা খরচ করে রক্ত পরীক্ষা করাতে হল।’’

জামিরের মতো ভুক্তভোগী বর্ধমানের কেতুগ্রামের চেঁচুরি গ্রামের বাসিন্দা গোপীনাথ দাস। তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার দাবি করছে স্বাস্থ্য পরিষেবা অনেক উন্নত হয়েছে। কিন্তু কান্দি হাসপাতালে এসে বিপরীত অভিজ্ঞতা হল। হন্যে হয়ে ঘুরেও রক্ত পরীক্ষার দিন মিলছে না।’’

তবে সব থেকে করুণ দশা হাসপাতালের এক্স-রে বিভাগের। ওই বিভাগে দু’জন কর্মী বরাদ্দ থাকলেও এক জনকে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকি একজন কর্মী বহু রোগীর এক্স-রে করার ভার সামলাতে পারেন না। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এক্স-রে বিভাগের সামনে তাই থিক থিক করছে ভিড়। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানালেন, এক জন কর্মী সারাদিনে মেরেকেটে ১৮টি এক্স-রে করতে পারেন। কিন্তু কান্দি হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৫০ জন রোগীর এক্স-রে করতে হয়। ফলে অর্ধেকের বেশি রোগী দিনের দিন এক্সরের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন।

একমাত্র ওই কর্মী কোনও কারণে হাসপাতালে না এলে সে দিন তো রোগীদের দুরাবস্থার সীমা-পরিসীমা থাকে না। ওই হাসপাতালের এক চিকিৎসকের বলেন, “এখন চিকিৎসা চলে পরীক্ষা নিরীক্ষার উপর ভিত্তি করে। কিন্তু টেকনিশিয়ানের অভাবে রক্ত পরীক্ষা থেকে শুরু করে এক্স-রে— সব ক্ষেত্রেই সমস্যা হচ্ছে। রোগীরা নির্দিষ্ট সময়ে ওই পরিষেবা পাচ্ছেন না।’’ মহকুমা হাসপাতালের সুপার মহেন্দ্র মান্ডি বলেন, “সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টি জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানানো হয়েছে।” কিন্তু সুরাহা? উত্তর দেননি সুপার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন