প্রতীকী চিত্র।
নন্দ সাহার গড়ে তৃণমূলের একাধিক দেওয়াল লিখন বিজেপি মুছে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
নবদ্বীপ ও মায়াপুরে যে তলে-তলে বিজেপির শক্তিবৃদ্ধি হচ্ছে তা বেশ কিছুদিন ধরেই রাজনৈতিক মহলে শোনা যাচ্ছিল। পুণ্ডরীকাক্ষ বা নন্দ সাহার মতো দাপুটে তৃণমূল নেতার এলাকায় শাসক দলের দেওয়াল লিখন মোছার মতো সাহস বিজেপি দেখানোয় শক্তিবৃদ্ধির কানাঘুষোয় শিলমোহর পড়ল বলেও অনেকে মনে করছেন।
তা হলে কি পুণ্ডরীকাক্ষ অসুস্থ হয়ে পড়ায় নবদ্বীপ এলাকায় তৃণমূলের রাশ আলগা হচ্ছে? বিকল্প এমন কোনও নেতা পাওয়া যাচ্ছে না যিনি লোকসভা ভোটের মতো গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নেতৃত্ব দিতে পারেন? এর ফায়দাই নিচ্ছে বিজেপি? এবিষয়ে নবদ্বীপের পুরপ্রধান বিমানকৃষ্ণ সাহা বলেন, “আসলে তৃণমূল প্রার্থীর প্রচারের দেওয়াল লিখন মুছে দেওয়াটা বিজেপির অপসংস্কৃতি। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বিজেপি মস্তানবাহিনী দিয়ে অন্যের দেওয়াল মুছে দখল নিচ্ছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দিয়ে ভয় দেখাচ্ছে। মানুষ সব দেখছে, ভোটে যোগ্য জবাব দেবে।”
এখানে প্রশ্ন উঠছে, বিজেপি মস্তানবাহিনী নিয়ে শাসক দলকে ভয় দেখিয়ে দেওয়াললিখন মুছে দিচ্ছে আর শাসক দল ভয় পাচ্ছে! রুখে দাঁড়াতে পারছে না বা বাধা দিতে পারছে না? তা হলে নবদ্বীপের উপর শাসক দলের প্রভাব অবশিষ্ট রইল কোথায়?
নদিয়ায় তৃণমূল সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্তের উক্তি, ‘‘কোথাও তৃণমূলের রাশ আলগা হয়নি। বিজেপি ফাটা কলসি। তাই আওয়াজ বেশি করছে।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বিজেপি নেতারা এক দিকে দেওয়াল মোছার বিষয়টি অস্বীকার করে একে তৃণমূলের ‘অপকৌশল’ বলেছেন, আবার অন্য দিকে, নবদ্বীপ উত্তর মণ্ডলের সভাপতি বিজেপির শঙ্কর গোস্বামীর বক্তব্য, ‘‘তৃণমূলের নেতারা সব সময় বলেন, নবদ্বীপে নাকি বিজেপির লোক নেই। তা হলে এখন তাঁরা মানছেন তো যে, শাসকদলের দেওয়াল মোছার মতো শক্তি বিজেপির হয়েছে ?’’
বৃহস্পতিবার রাতে নবদ্বীপ পুরসভার দশ এবং এগারো নম্বর ওয়ার্ডে রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী রূপালী বিশ্বাসের সমর্থনে লেখা মোট পাঁচটি দেওয়াল লিখন মুছে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই দিন রাতেই তৃণমূলের তরফে নবদ্বীপ থানায় এ বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়।
শহরের দশ নম্বর ওয়ার্ডের পোড়াঘাট অঞ্চলে দু’টি দেওয়ালে তৃণমূলের লেখা মুছে বিজেপি প্রার্থীর পক্ষে দেওয়াল লেখা হয়েছে বলে অভিযোগ। বিষয়টি স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের নজরে এলে তাঁরা স্থানীয় কাউন্সিলার মণিকা চক্রবর্তীকে বিষয়টি জানান। তৃণমূলের অভিযোগ, একই ভাবে এগারো নম্বর ওয়ার্ডেও তাদের লেখা তিনটি দেওয়াল মুছে দিয়েছে বিজেপি। এ ব্যাপারে পুলিশের কাছে অভিযোগও জানিয়েছে তৃণমূল।