মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সত্যজিৎ বিশ্বাসের মা। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য
সংখ্যালঘু অধ্যুষিত কালীগঞ্জের সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি বললেন ‘‘সংখ্যালঘুদের উপরে অত্যাচার হচ্ছে।’’ আবার মতুয়া অধ্যুষিত বগুলার মাটিতে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘‘মতুয়া বাড়ির নামে আমি অনেক কাজ করেছি।’’ যা শুনে, তৃণমূলেরই অনেকে বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ বার নদিয়ার দুটো লোকসভা কেন্দ্র জয়ের জন্য যে এই দুই ভোটব্যাঙ্ক নিশানা করেছেন, তা কার্যত স্পষ্ট।
কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে সংখ্যালঘু ভোটার প্রায় ৩৬ শতাংশ। সেই ভোট যাতে অক্ষুণ্ণ থাকে, তার জন্য সব রকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তৃণমূল। দলেরই একটা অংশের মতে, সেই কারণেই সংখ্যালঘু প্রধান কালীগঞ্জ বিধানসভা এলাকাকে মমতার প্রথম জনসভার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল। এই এলাকার এক দিকে পলাশিপাড়া, আর অন্য দিকে নাকাশিপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রেরও একই চিত্র। গত পঞ্চায়েত ভোটে আবার নাকাশিপাড়ায় অনেকটাই জমি কেড়েছে বিজেপি।
আবার রানাঘাট লোকসভার ভাগ্য ঝুলে আছে পূর্ববঙ্গ থেকে আসা হিন্দু ভোটার, বিশেষত নমঃশূদ্র ও মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের উপরে। মতুয়া ভোটারদের এত দিন ধরে রেখেছিলেন কৃষ্ণগঞ্জের নিহত বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস। তিনি খুন হওয়ার পরে সেই জায়গা অনেকটাই শিথিল। অথচ এই ভোটের উপরেই নির্ভর করছে ওই কেন্দ্রের প্রার্থী, সত্যজিতের স্ত্রী রূপালী বিশ্বাসের ভাগ্য। এ দিন বগুলার মঞ্চে ছিল সত্যজিতের শিশুপুত্র সৌম্যজিৎ। তাকে বেশ কিছুক্ষণ ধরে আদর করেন মমতা। পরে বলেন, “আমি হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয় করেছি। তার একটা ক্যাম্পাস করছি কৃষ্ণনগরে। মতুয়া ডেভলপমেন্ট বোর্ড, নমঃশূদ্র বোর্ড করেছি।” নদিয়ার মানুষের জন্য কী কী উন্নয়ন করা হয়েছে, তার তালিকাও তিনি তুলে ধরেছেন।
এ দিন দুই সভাতেই বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদীকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন মমতা। বলেন, “তুমি নোট বাতিল করেছ। এ বার বাংলার মানুষ তোমায় বাতিল করবে।”
মমতার দাবি, এর আগে দলিত, তফসিলি, আদিবাসীদের উপরে এত অত্যাচার হয়নি। মোদী আবার দিল্লি দখল করলে দেশে গণতন্ত্র থাকবে না বলে ভোটারদের সতর্ক করেন তিনি। সেই সঙ্গে ফের জানান, নাগরিক পঞ্জি তিনি এই বাংলায় করতে দেবেন না। বলেন, “পাঁচ বছরের জন্য আপনাকে বিদেশি বানিয়ে দেবে। তারপর ইচ্ছে হলে নাগরিক করবে, না হলে করবে না। আমরা আটকে দিয়েছি।”