কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থীকে জেতাতে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাতে চলেছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ। সেই মতো কড়া বার্তাও দেওয়া হয়েছে জেলার বিজেপি নেতৃত্বকে। কোনও রকম ক্ষোভ-বিক্ষোভ যে বরদাস্ত করা হবে না, তা-ও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে যাঁরা বিদ্রোহ করেছিলেন তাঁরা এখন ক্ষোভ-বিক্ষোভ আস্তিনে ঢুকিয়ে মুখ লুকোতে ব্যস্ত।
নদিয়ার দু’টি লোকসভা আসনের মধ্যে কৃষ্ণনগর কেন্দ্রটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই নীরবে জমি তৈরি করে আসছে আরএসএস। এই এলাকায় তাদের বেশ কয়েকটি শাখা সংগঠন অনেক দিন ধরেই সক্রিয়। কৃষ্ণনগর কেন্দ্রের প্রার্থী বাছাই থেকে শুরু করে নির্বাচন পরিচালনা-সহ প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রেই আরএসএস গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে বলেও বিজেপি সূত্রের খবর।
বিজেপির একটি সূত্রের দাবি, এই কেন্দ্রে প্রার্থী হিসাবে একাধিক নাম ঘোরাফেরা করলেও শেষ মুহূর্তে মূলত সঙ্ঘের তৎপরতাতেই প্রার্থী করা হয় প্রাক্তন ফুটবলার কল্যাণ চৌবেকে। সঙ্ঘ পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘ দিন ধরে সক্রিয় ভাবে আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত কল্যাণ। সংগঠনের বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয় ভাবে অংশ নিতে দেখা যায় তাঁকে। ২০১৪ সালে তিনি নদিয়ার গয়েশপুরে ‘যুব শিবিরে’ অন্যতম অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বলেও জানা গিয়েছে।
ফলে, কল্যাণকে জেতাতে সঙ্ঘ যে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাপাবে তা বলাই বাহুল্য। সঙ্ঘ পরিবার সূত্রের খবর, কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে ভোট পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাদের খেলাধুলো সংক্রান্ত সংগঠন ‘ক্রীড়া ভারতী’-কে। তার জন্য দিল্লি থেকে উড়িয়ে আনা হচ্ছে সংগঠনের সর্বভারতীয় সহ-সম্পাদক মধুময় নাথকে। তিনি দু’এক দিনের মধ্যেই কৃষ্ণনগরে চলে আসবেন। শহরে সঙ্ঘের কার্যালয়ে খোলা হচ্ছে ‘ওয়ার রুম’। সেখান থেকেই তিনি নির্বাচন পরিচালনা করবেন। চিরাচরিত গোষ্ঠী কোন্দল যে চলবে না, দিন দুয়েক আগেই নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মহাদেব সরকার ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সাধারণ সম্পাদক প্রাণবন্ধু বিশ্বাসকে ডেকে তা পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
শুধু তা-ই নয়। প্রাক্তন সাংসদ সত্যব্রত মুখোপাধ্যায় ওরফে জলুবাবু টিকিট না পাওয়ায় যাঁরা ক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন, ভোটের কাজ না করে বসে যাওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন, তাঁদেরও পরিষ্কার বার্তা দেওয়া হয়েছে যে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কোনও রকম বিরোধিতা সহ্য করা হবে না। ফলে রবিবার থেকেই তাঁদের ফণা নামাতে দেখা গিয়েছে। সঙ্ঘ পরিবারের এক কার্যকর্তা বলছেন, “এ বার সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করেই আমরা অনেক আগে থেকে প্রস্তুতি শুরু করেছি। বিরোধীদের রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলা করব। কিন্তু অভ্যন্তরীণ প্রতিবন্ধকতা মেনে নেওয়া হবে না।”