হাসপাতালে অর্জুন। নিজস্ব চিত্র
এক তৃণমূল কর্মীকে মারধর করার অভিযোগ উঠল বিজেপি সমর্থকদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে তেহট্টের বেতাই বাজারে তৃণমূল কার্যালয়ের সামনে ঘটনাটি ঘটে। আহত তৃণমূল কর্মী অর্জুন হালদার তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর অভিযোগ, ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে রাজি না হওয়ায় তাঁর উপরে হামলা চালানো হয়। কিন্তু পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে তিনি সে কথা জানাননি। শুক্রবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতারও হয়নি।
ক’দিন আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণা থেকে কেশপুর যাওয়ার পথে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান শুনে গাড়ি থেকে নেমে পড়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই ঘটনায় তিন জনকে আটক করে পুলিশ। নরেন্দ্র মোদী এই নিয়ে পাল্টা মন্তব্য করায় রাজনৈতিক তরজা জমে উঠেছে। রাজ্যের নানা জায়গায় বিজেপি কর্মীরা ‘জয় শ্রীরাম’ বলে হাঁক দিচ্ছেন এবং তার জেরে খুচরো অশান্তিও হচ্ছে।
তেহট্টের বেতাই এলাকার বাসিন্দা অর্জুনের জানান, রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ দলীয় কার্যালয় বন্ধ করে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন। তাঁর অভিযোগ, সেই সময়ে জনা পাঁচেক বিজেপি কর্মী ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিয়ে তাঁর উপরে চড়াও হয়। তাদের মধ্যে এক জন এগিয়ে এসে তাঁকেও ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে বলে। তিনি রাজি না হওয়ায় তারা কিল-চড় মারতে শুরু করে। ঘুসিতে নাক ফাটে অর্জুনের। শুক্রবার হাসপাতালে শুয়ে তিনি বলেন, ‘‘ওদের হাতে লাঠিও ছিল। আমি কোনও মতে পালিয়ে বাঁচি। না হলে আরও মারধর করত।” তাঁর নাকে তিনটি সেলাই পড়েছে।
তবে তেহট্ট থানায় দায়ের করা লিখিত অভিযোগে অর্জুন এই বৃত্তান্ত জানাননি। ‘পূর্ব রাগবশত’ আক্রমণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শুধু। পুলিশ জানায়, তেলু হালদার নামে এক জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তিনি এলাকায় বিজেপি কর্মী বলে পরিচিত। কী কারণে হামলা করা হল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা তেহট্টের বিধায়ক গৌরীশঙ্কর দত্তের অভিযোগ, “বিজেপি সর্বত্র যা করছে, এখানে তা-ই করেছে। ওই ছেলেগুলো মত্ত অবস্থায় ছিল।” সেই সঙ্গেই তিনি যোগ করেন, “আমরা আইন হাতে তুলে নিইনি। পুলিশকে দেখতে বলেছি। প্রয়োজন হলে পরে আমরা রাজনৈতিক ভাবেও পদক্ষেপ করব।”
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মহাদেব সরকার বলেন, “আমাদের কর্মীরা এমন কাজ করে না। খোঁজ নিয়ে দেখেছি, এমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি। যা হয়েছে, তা আসলে পুরনো কোনও গন্ডগোল থেকেই ঘটেছে।”