তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে জখম ৮

ফের অশান্তি ভাতশালায়

গত পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকেই বারবার তপ্ত হয়েছে চাপড়া। পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন নিয়ে চলেছে বোমাবাজি। বিশেষ করে ভাতশালা ও তার আশপাশের গ্রামগুলিতে বিজেপির উত্থান তৃণমূলকে চাপে ফেলে দিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ভীমপুর শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৯ ০২:১৪
Share:

হাসপাতালে জখম বিজেপি কর্মী বাদল মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র

ছাগলে‌ কলাগাছ খাওয়া নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপির মারপিটে জখম হলেন আট জন। ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল ভীমপুরের ভাতশালা গ্রাম। উভয় পক্ষের বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন। পাঁচ বিজেপি কর্মীকে গুরুতর জখম অবস্থায় শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তৃণমূলের তিন জন তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি। তবে রবিবার রাত পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি।

Advertisement

গত পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকেই বারবার তপ্ত হয়েছে চাপড়া। পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন নিয়ে চলেছে বোমাবাজি। বিশেষ করে ভাতশালা ও তার আশপাশের গ্রামগুলিতে বিজেপির উত্থান তৃণমূলকে চাপে ফেলে দিয়েছে। গোটা চাপড়া ব্লকের মধ্যে মূলত এই এলাকায় তৃণমূলের কার্যত কোণঠাসা অবস্থা। এ বার লোকসভা ভোটে এই এলাকা থেকে তারা ভাল লিড পাবে বলে মনে করছে বিজেপি। ভোটের পর থেকেই গন্ডগোলের আশঙ্কা ছিল। শনিবার তা সত্যিই বেধে গেল।

স্থানীয় সূত্রের খবর, তৃণমূলের মানিক মণ্ডল ও বিজেপির বাদল মণ্ডলের মধ্যে বিবাদ দীর্ঘদিনের। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের দাবি, এ বার গোলমালের সূত্রপাত হয় ছাগলে কলাগাছ খাওয়া নিয়ে। দিন কয়েক আগে কলাগাছ পুঁতেছিলেন তৃণমূল সমর্থক মধুসূদন মণ্ডল। শনিবার দুপুরে সেই কলাগাছের পাতা খেয়ে নেয় বিজেপি সমর্থক অভিজিৎ মণ্ডলের ছাগল। তা নিয়ে সন্ধের দিকে দু’পক্ষের কথা কাটাকাটি শুরু হয়। তাতেই একটু-একটু করে জড়িয়ে পড়ে দুই রাজনৈতিক দলের লোকজন।

Advertisement

তৃণমূলের অভিযোগ, বাদল তাঁর লোকজন নিয়ে অভিজিতের পক্ষ নিতে এগিয়ে আসেন। মানিকের স্ত্রী, পঞ্চায়েত সদস্য অসীমা মণ্ডল। তাঁদের বাড়ির সামনে গালিগালাজ করা শুরু হয়। মানিকের এক ভাইপো প্রতিবাদ করলে তার উপরে চড়াও হয় বিজেপির লোকজন। তাঁর ভাইপো, দাদা ও বৌদিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয় বলে অভিযোগ। রবিবার রাতেও মানিকের এক দাদাকে রাস্তায় ধরে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

আবার বিজেপির অভিযোগ, এমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি। তাদের দাবি, গরমের কারণে বাড়ির সামনে রাস্তার পাশে খোলা জায়গায় বলে তাদের লোকজন গল্প করছিলেন। সেই সময়ে আচমকা তৃণমূলের লোকজন এসে এলোপাথাড়ি কোপায়। বিজেপি নেতা বাদল মণ্ডল ও তার পরিবারের পাঁচ জন গুরুতর জখম হন।

পরে খবর পেয়ে ভীমপুর থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। বিজেপির ২০ নম্বর জেলা পরিষদ মণ্ডলের সভাপতি উত্তম সেনের দাবি, “ওই এলাকায় তৃণমূল পায়ের তলার মাটি হারিয়ে ফেলেছে। সেই কারণে রাতে আচমকা চড়াও হয়ে কোপাল। মহিলাদেরও বাদ দিল না।”

তৃণমূলের চাপড়া ব্লক সভাপতি জেবের শেখের পাল্টা দাবি, “বিজেপির লোকজন আমাদের পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতে ঢুকে মারধর করে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপায়। তাতেই সাধারণ মানুষ খেপে গিয়ে পাল্টা প্রতিরোধ করেছেন।” তবে রাত পর্যন্ত কোনও পক্ষই পুলিশে অভিযোগ জানায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন