জামিন পেয়েই হুমকি নিহতের বোনকে

খুনের অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছিল মাস দেড়েক আগে। দিনকয়েক আগে সে জামিনে ছাড়াও পেয়েছে। সেই তন্ময় বিশ্বাসের নামে সোমবার ফের শান্তিপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করল নিহতের পরিবার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শান্তিপুর শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৭ ০১:০৭
Share:

খুনের অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছিল মাস দেড়েক আগে। দিনকয়েক আগে সে জামিনে ছাড়াও পেয়েছে। সেই তন্ময় বিশ্বাসের নামে সোমবার ফের শান্তিপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করল নিহতের পরিবার। অভিযোগ, তন্ময় নাগাড়ে নিহতের পরিবারকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। তার বিরুদ্ধে মামলা না তুললে সে খুনের হুমকিও দিচ্ছে।

Advertisement

গত বছর সরস্বতী পুজোর পরের দিন থেকে নিখোঁজ ছিল শান্তিপুরের বড় কুলিয়া গ্রামের বছর সতেরোর সৌরভ বিশ্বাস। ছ’দিন পরে বাড়ির কাছে একটি বিল থেকে তার দেহ উদ্ধার হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, মদ খাইয়ে সৌরভকে খুন করা হয়।

জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, সন্ধ্যার পরে তাকে ফোন করে ডাকে কর্ণ মজুমদার নামে সৌরভের এক বন্ধু। তারা বিলের পাশেই একটি আম বাগানে মদের আসর বসিয়েছিল। সেখানে আগে থেকেই উপস্থিত ছিল সৌরভের আত্মীয় তন্ময় বিশ্বাসও। অভিযোগ, মদ খাইয়ে সেখানেই তাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে বিলে পুঁতে ফেলা হয়।

Advertisement

ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিল তন্ময় ও কর্ণ। পরে কর্ণকে গ্রেফতার করা হলেও তন্ময় পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। পরে একদিন মদ্যপ অবস্থায় তন্ময়কে গ্রামে দেখতে পান এলাকার লোকজন। তারাই তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরে দু’জনেই জামিন পেয়ে যায়। সৌরভের বাবা গণেশ বিশ্বাসকে এর আগে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য তন্ময় হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ। সোমবার স্কুলে যাচ্ছিল সৌরভের বোন। তার অভিযোগ, “সাইকেলে স্কুলে যাচ্ছিলাম। সঙ্গে চার বন্ধুও ছিল। কাদাভাগার কাছে ফাঁকা রাস্তায় তন্ময় আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে আমাকে থামিয়ে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেয়।’’

সেখান থেকে সৌরভের বোন কোনও রকমে পালিয়ে গিয়ে রাস্তার পাশে এক সহপাঠীর বাড়িতে ঢুকে আশ্রয় নেয়। মেয়ের মুখে গোটা ঘটনা জেনে গণেশবাবু থানায় গিয়ে তন্ময়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। গণেশবাবু বলছেন, ‘‘ছেলেটাকে মেরেও শান্তি হয়নি। এখন ওরা আমাদের পরিবারটাকেই শেষ করে দিতে চাইছে।’’

স্থানীয় বাসিন্দারাও তন্ময়ের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ। তাঁরা জানাচ্ছেন, সরস্বতীপুজোর সময় যে কী ঘটেছিল তা ভাবলে আজও গায়ে কাঁটা দেয়। সেই ঘটনার পরে হইচইও কম হয়নি। ছেলে দু’টো ধরা পড়েছিল। কিন্তু সংশোধন হওয়া তো দূরের কথা, তারা যেন আরও বেশি সাহসী হয়ে উঠেছে। জেলার পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, “অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সেই মতো আইনি পদক্ষেপ করা হবে।” পুলিশ জানিয়েছে, এ দিনের ঘটনার পরেও তন্ময় ফের গা ঢাকা দিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন