Sonali Guha

‘অভ্যাস’ যায়নি! বিজেপির হয়ে প্রচারে বেরিয়ে তৃণমূলের জন্য ভোট চাইলেন মমতার একদা ‘ছায়াসঙ্গিনী’

তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া সোনালিকে গত জুন মাসে দলের মহিলা মোর্চার রাজ্য কর্মসমিতির সদস্য করেছে বিজেপি। তার পর থেকেই পঞ্চায়েত ভোটে দলীয় প্রার্থীদের প্রচারে বেরোতে দেখা যাচ্ছে তাঁকে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

পলাশিপাড়া শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৩ ২৩:৩৭
Share:

বিজেপি প্রার্থীদের হয়ে প্রচারে বেরিয়ে জোড়াফুলে ভোট দেওয়ার আবেদন জানালেন সোনালি গুহ। —নিজস্ব চিত্র।

দলবদল করলেও পুরনো ‘অভ্যাস’ যায়নি! বিজেপি প্রার্থীদের হয়ে প্রচারে বেরিয়ে জোড়াফুলে ভোট দেওয়ার আবেদন জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক কালের ‘ছায়াসঙ্গিনী’ সোনালি গুহ। এক বার নয়, একাধিক বার তাঁকে বলতে শোনা গেল, ‘‘জোড়াফুল চিহ্নে ভোট দিন।’’

Advertisement

তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া সোনালিকে গত জুন মাসে দলের মহিলা মোর্চার রাজ্য কর্মসমিতির সদস্য করেছে বিজেপি। তার পর থেকেই পঞ্চায়েত ভোটে দলীয় প্রার্থীদের প্রচারে বেরোতে দেখা যাচ্ছে তাঁকে। শনিবার সোনালি নদিয়ার পলাশিপাড়া থানার শ্যামনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় গিয়ে বিজেপি প্রার্থীদের সঙ্গে বাড়ি বাড়ি প্রচারে বেরোন। সেখানেই তাঁকে তৃণমূলের জন্য ভোট চাইতে দেখা যায়। প্রথমে দলীয় কর্মীরা তাঁর সুরে গলা মেলালেও সঙ্গে সঙ্গেই ভুল বুঝতে পারেন। সোনালিকে সাবধানও করা হয়। কিন্তু তত ক্ষণে যা ঘটার ঘটে গিয়েছে! মোবাইলবন্দি হয়ে গিয়েছে সেই মুহূর্ত। নেটমাধ্যমে ছড়িয়েও পড়ে তা।

পরে এ ব্যাপারে সোনালি বলেন, ‘‘অসাবধানতাবশত ভুল। এটা নিয়ে এত বড় করে কিছু ভাববার কোনও কারণ নেই।’’ এ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না শাসকদল তৃণমূল। দলের বিধায়ক তাপস সাহার টিপ্পনি, ‘‘উনি দীর্ঘ দিন ধরে আমাদের দল করেছেন। সেই কৃতজ্ঞতা বোধ থেকেই হয়তো জোড়াফুলে ভোট দিতে বলেছেন।’’

Advertisement

চারুচন্দ্র কলেজের প্রাক্তন ছাত্রী সোনালির রাজনৈতিক জীবনের সবটাই ‘মমতা’ময়। একটা সময় তিনি ছিলেন ‘দিদি’র ‘ছায়াসঙ্গিনী’। সিঙ্গুর থেকে নন্দীগ্রাম, নেতাই থেকে চমকাইতলা— সর্বত্র মমতা মানেই সোনালি। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর কেন্দ্র ছিল সাতগাছিয়া। পাঁচ বার বিধায়ক থাকার পরে ২০০১ সালে তিনি ভোটে দাঁড়াননি। সেই বছরই সোনালি সাঁতগাছিয়া থেকে তৃণমূলের টিকিটে বিধায়ক হন। ২০০১ থেকে ২০১৬ টানা চার বার তিনি এই আসন থেকে জেতেন। তৃণমূল ক্ষমতায় এলে তাঁকে মন্ত্রী না করা হলেও বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার করেন মমতা। কিন্তু ২০২১ সালে তাঁর জায়গায় মোহনচন্দ্র নস্করকে ওই আসনে প্রার্থী করে তৃণমূল। প্রার্থিতালিকা প্রকাশের দিন কেঁদে ফেলেছিলেন সোনালি। আর তার পরে মুকুল রায়ের সঙ্গে গিয়ে তৎকালীন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের হাত থেকে নতুন দলের পতাকা নেন। কিন্তু বিজেপিও প্রার্থী করেনি তাঁকে। এর পরে রাজনীতি থেকে আড়ালে চলে যান সোনালি। গত পুরভোটেও রাজনীতির ময়দানে দেখা যায়নি তাঁকে। সম্প্রতি মহার্ঘ্য ভাতার দাবিতে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলনের মঞ্চে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে হাজির হয়ে আবারও রাজ্য-রাজনীতির পরিসরে ভেসে ওঠেন সোনালি। দেখা করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গেও। এর পরেই একদা মমতা-ঘনিষ্ঠকে মহিলা মোর্চার রাজ্য কর্মসমিতির সদস্য করে বিজেপি। সেই দলের হয়েই ভোটপ্রচারে এ বার বিপত্তি ঘটালেন সোনালি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন