পণ না পেয়ে মেয়েকে খুন, ধৃত যুবক

ভরতপুরের আঙ্গারপুর গ্রামের বাসিন্দা মিকুল গ্রামেরই এক তরুণীকে বিয়ে করেছিল। কিন্তু তাঁর সন্তান না হওয়ার টোটো চালক মিকুল কান্দির রানিপুরের রেহেনাকে বিয়ে করে। মাস তিনেক আগে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন রেহেনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ভরতপুর শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:০০
Share:

রেহেনা বিবি। নিজস্ব চিত্র

পণ না পেয়ে তিন মাসের কন্যাসন্তানকে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম মিকুল শেখ। বুধবার দুপুরে মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের ওই ঘটনায় শিশুকন্যার ঠাকুমার খোঁজেও তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। আজ, বৃহস্পতিবার মিকুলকে আদালতে হাজির করানো হবে।

Advertisement

ভরতপুরের আঙ্গারপুর গ্রামের বাসিন্দা মিকুল গ্রামেরই এক তরুণীকে বিয়ে করেছিল। কিন্তু তাঁর সন্তান না হওয়ার টোটো চালক মিকুল কান্দির রানিপুরের রেহেনাকে বিয়ে করে। মাস তিনেক আগে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন রেহেনা। দ্বিতীয় বিয়ের পরে মিকুলের প্রথম পক্ষের স্ত্রী বাপের বাড়ি চলে যান।

রেহেনার অভিযোগ, ‘‘মিকুল আমাকে ভালবেসে বিয়ে করেও পণের জন্য অত্যাচার করত। মেয়েটা জন্মানোর পর থেকেই ওর অত্যাচার আরও বাড়ে। প্রায় দিনই মদ খেয়ে বাড়ি ফিরে আমাকে বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য চাপ দিত। মেয়ে হয়েছে বলে মারধরও করত। আমি মেয়ের জন্ম দিয়ে কী অপরাধ করেছি, বলুন তো?’’

Advertisement

অভিযোগ, এ দিন সকালে মত্ত অবস্থায় বাড়ি ফেরে মিকুল। রেহেনাকে বাড়ির সামনে দেখতে পেয়ে বেধড়ক মারধর করে। রেহেনা ও তাঁর কন্যা সীমাকে খুনের হুমকি দেয় মিকুল। পুলিশকে কেউ জানালে তাঁকেও খুন করে দেবে বলে শাসায় মিকুল। বাড়িতে সীমাকে রেখে রেহেনা ভরতপুর থানায় অভিযোগ জানাতে যান। সেই সময় তিন মাসের কন্যাসন্তানকে শ্বাসরোধ করে খুন করে মিকুল। তার পরে বাড়ি থেকে পাঁচশো মিটার দূরে কুঁয়ে নদীর ধারে কাশবনে দেহ ফেলে পালানোর চেষ্টা করে।

স্থানীয় বাসিন্দারা দেখতে পেয়ে মিকুলকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন। তবে আর এক অভিযুক্ত খোসমুন বিবি বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। রেহেনা বলছেন, “পণ না পেয়ে ও যে মেয়েটাকে সত্যি সত্যিই শেষ করে ফেলবে তা ভাবতেও পারিনি। মিকুল ও আমার শাশুড়ির শাস্তি চাই।”

মিকুলের পড়শিরাও জানিয়েছেন, রেহেনার মেয়ে হওয়ার পর থেকেই মিকুলের অত্যাচার আরও বাড়ে। রেহেনার নামে আট কাঠা জমি রয়েছে। বাপের বাড়ি থেকে পণের পাশাপাশি সেই জমি বিক্রি করে টাকা আনার জন্যও চাপ দিত। প্রায় দিনই মত্ত অবস্থায় বাড়ি ফিরে রেহেনাকে মারধর করত সে।

ভরতপুর ১ বিডিও অঞ্জন চৌধুরী বলেন, “পণ না পেয়ে আঙ্গারপুর গ্রামের এক যুবক কন্যাসন্তানকে খুন করেছে বলে জানতে পেরেছি। এমন ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। পুলিশকে গোটা ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন