Kangaroo Court

সালিশির রায় আপন উঠোনে অবশ্য গ্রাহ্য করেন না মাতব্বরেরা

পারিবারিক বিবাদের মীমাংসা নামে গত সপ্তাহে জঙ্গিপুর শহরের বুকে এই ঘটনায় নড়ে চড়ে বসেছে প্রশাসনও। মুর্শিদাবাদে বহু কাল ধরেই সালিশি চলছে।

Advertisement

বিমান হাজরা

রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:১০
Share:

প্রতীকী ছবি।

সালিশি বসিয়ে সভার মাঝেই এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় ফের প্রশ্নের মুখে সালিশির বিচার।

Advertisement

পারিবারিক বিবাদের মীমাংসা নামে গত সপ্তাহে জঙ্গিপুর শহরের বুকে এই ঘটনায় নড়ে চড়ে বসেছে প্রশাসনও। মুর্শিদাবাদে বহু কাল ধরেই সালিশি চলছে। তবে এ বার তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে শিবগাতুল্লা নামে এক গ্রামীণ চিকিৎসককে খুনের পরেই। অনেকেই বলছেন, সালিশির বিচারে অপমানিত হয়ে আত্মহত্যা অথবা জরিমানার নজির রয়েছে ভুরি ভুরি। কিন্তু খুনের ঘটনা এই প্রথম। ইতিমধ্যেই খুনের অভিযোগে গ্রেফতারও হয়েছে ৪ জন। কিন্তু আইন, আদালত, পুলিশ সব কিছুকে পাশ কাটিয়ে বার বার জেলা জুড়ে সালিশির এত রমরমা কেন?

সালিশি সভায় পিটিয়ে মারার ঘটনার অন্যতম প্রত্যক্ষদর্শী জঙ্গিপুরের প্রবীণ তৃণমূল নেতা তাঞ্জিলুর রহমান বলছেন, “সালিশি মানে মীমাংসা। বিচার নয়। ফৌজদারি কোনও বিষয় নিয়ে সালিশি বসাও উচিত নয়।’’ তা হলে সে দিন কেন বসেছিল? তাঞ্জিলুরের বক্তব্য, ‘‘স্ত্রী ও স্বামীর মধ্যের বিরোধ নেহাতই পারিবারিক বিষয়। তাই সালিশি বসে। কিন্তু সেখানে এমন কাণ্ড ঘটতে পারে, ভাবা যায়নি।”

Advertisement

তবে তাঞ্জিলুর সালিশির অর্থ মীমাংসা বললেও, বাস্তবে বহু জায়গাতেই তা ঘটে না। যেমন সুতির ডিহিগ্রামের ঘটনা। সালিশি বসিয়ে গ্রামে ধর্ষণের বিচার করেছিলেন সেদিন গ্রামেরই পাঁচ মাতব্বর। তাঁদের মধ্যে ছিলেন গ্রামেরই সিপিএমের এক তৎকালীন পঞ্চায়েত সদস্যও। অন্যরা সিপিএমেরই সমর্থক হিসেবে পরিচিত ছিলেন তখন। এখন তাঁদের অনেকেই তৃণমূলে। সালিশির বিচারে কান ধরে ওঠবোস ও ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা করে সেদিন রেহাই দেওয়া হয়েছিল ধর্ষণে অভিযুক্ত এক যুবককে। পরে জেলার তৎকালীন পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীরের কানে যায় কথা। তাঁরই নির্দেশ পেয়ে সুতি থানার পুলিশ তদন্তে নামে। তখন জানা যায়, নির্যাতিতা ও তাঁর মা প্রথমে থানাতেই যাচ্ছিলেন। তাঁদের সেখান থেকে ফিরিয়ে আনেন গ্রামের মাতব্বরেরাই। নির্যাতিতার মায়ের অভিযোগ, “মাতব্বরদের পরিবারে এই ঘটনা ঘটলে তাঁরা কি মানতে পারতেন সালিশির এই রায়?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন