কাকাকে পিটিয়ে মারল ভাইপো

পুলিশ জানায়, বুধবার রাত থেকে নিখোঁজ ছিলেন সুধাকর। বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ি থেকে দেড়শো মিটার দূরে গ্রামের মধ্যে একটি সরকারি গুদাম ঘরের পিছনে পুকুরের ধারে ওই বৃদ্ধের ক্ষতবিক্ষত দেহ দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ভরতপুর শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৯ ০২:০৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

এক বৃদ্ধকে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে মারার অভিযোগে পুলিশ তরুণ ঘোষ ও নমিতা ঘোষ নামে দুজনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃত দুজন সম্পর্কে মা ও ছেলে। মৃত সুধাকর ঘোষ (৬২) সম্পর্কে তরুণের কাকু হন। ঘটনাটি ঘটেছে ভরতপুর থানার গড্ডা অঞ্চলের কোল্লা গ্রামে।

Advertisement

পুলিশ জানায়, বুধবার রাত থেকে নিখোঁজ ছিলেন সুধাকর। বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ি থেকে দেড়শো মিটার দূরে গ্রামের মধ্যে একটি সরকারি গুদাম ঘরের পিছনে পুকুরের ধারে ওই বৃদ্ধের ক্ষতবিক্ষত দেহ দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেহ উদ্ধার করে কান্দি মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্তে পাঠায়।

পুলিশের এক কর্তা জানান, তদন্তে নেমে পুলিশ দেখে নমিতার বাড়ি থেকে গুদামঘর পর্যন্ত রক্তের দাগ দেখতে পেয়েই সন্দেহ হয়। এর পরেই নমিতা, তাঁর স্বামী হরিসাধন ঘোষ ও তরুণকে আটক করে জেরা করে। জেরার মুখে তরুণ ভেঙে পড়ে এবং খুনের কথা স্বীকার করে। ওই খুনের ঘটনায় ছেলেকে সঙ্গে দেওয়ার কতাও স্বীকার করেছেন নমিতা। তার পরেই মা ও ছেলেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জেনেছে, সুধাকরকে খুনের পরে প্রমাণ লোপাটের জন্য তাঁর রক্ত মাখা দেহ বাড়ি থেকে ছেঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে খুনে ব্যবহৃত বাঁশ ও ধারাল একটি ছুরিও নমিতার বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

Advertisement

ওই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ এক মহিলা-সহ আরও চারজনকে আটক করেছে ভরতপুর থানার পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুধাকরের তিন ছেলে। তিন বছর আগে মারা গিয়েছেন তাঁর স্ত্রী। তিন ছেলের মধ্যে দুই ছেলে ভিন জেলায় কর্মরত এবং মেজো ছেলে নরেণ ঘোষ বাড়িতেই থাকেন।

বুধবার রাতে বাবা ও ছেলে এক সঙ্গে রাতের খাবার খেয়েছেন। এর পরে নরেণ গ্রামেই শ্বশুরবাড়িতে চলে গিয়েছিলেন। সুধাকরও তার কিছু পরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন বলেই পুলিশ জানতে পেরেছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, বৌদি নমিতার সঙ্গে দেওর সুধাকরের সম্পর্ক ছিল।

ওই সম্পর্কের টানেই ছেলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরে সুধাকরও নমিতার বাড়িতে গিয়েছিলেন। তখনই ভাইপো তরুণ কোনও ভাবে বিষয়টি জানতে পেরে কাকুকে বাঁশের লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করলে অজ্ঞান হয়ে যান। তখনই মৃত্যু নিশ্চিত করতে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কানের পাশে এলোপাথাড়ি আঘাত করে বলে জেরার মুখে পুলিশকে জানিয়েছে তরুণ ও নমিতা।

যদিও সুধাকরকে খুনের পিছনে কোন কারণ খুঁজে পাচ্ছে না পরিবারের লোকজন। ছেলে নরেণ বলছেন, “তরুণ আমার জেঠতুতো দাদা। কিন্তু কেন বাবাকে খুন করল বুঝতে পারছি না। বাবা তরুণদাকেও খুব ভালবাসত। বাবার খুনিদের উপযুক্ত সাজা হোক, আমি চাই।”

কান্দির এসডিপিও যশপ্রীত সিং জানান, খুেনর একটি ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন