COVID-19

আশঙ্কাতেই কম টিকাকরণ

শনিবার ১০টি কেন্দ্রে ১০০ জন করে মোট ১০০০ জনকে টিকা দেওয়ার কথা ছিল নদিয়ায়। কিন্তু নিয়েছেন মাত্র ৪৯৩ জন।

Advertisement

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২১ ০৩:০৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

করোনার টিকা প্রাপকদের প্রথম একশো জনের তালিকা তৈরি করতে গিয়ে কার্যত নাকানিচোবানি খেতে হয়েছে জেলার সব হাসপাতালের সুপার ও বিএমওএইচদের। শেষ পর্যন্ত তালিকা তৈরি করা গেলেও টিকা নেওয়ার জন্য দেখা মেলেনি অনেকেরই। ফলে টিকাকরণের লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকও পূরণ সম্ভব হয়নি নদিয়ায়।

Advertisement

শনিবার ১০টি কেন্দ্রে ১০০ জন করে মোট ১০০০ জনকে টিকা দেওয়ার কথা ছিল নদিয়ায়। কিন্তু নিয়েছেন মাত্র ৪৯৩ জন। অর্থাৎ টিকা নেওয়ার হার সাকূল্যে ৪৯ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি প্রাপক ছিলেন করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানে ৮০ জন টিকা নিয়েছেন। আর বিষ্ণুপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সবচেয়ে কম মাত্র ১৯ জন টিকা নিলেন।

সরকারি নির্দেশ ছিল, যাঁরা স্বেচ্ছায় টিকা নিতে চাইবেন একমাত্র তাঁদেরই দিতে হবে। কাউকে জোর করা যাবে না। শেষ পর্যন্ত এত কম সংখ্যক লোক টিকা নেওয়ায় কার্যত হতাশ স্বাস্থ্যকর্তারা। তাঁরা জানিয়েছেন, শুক্রবার ভ্যাকসিন প্রক্রিয়ায় জন্য নির্দিষ্ট কোউইন ওয়েবসাইটে ভ্যাকসিন প্রাপকদের নাম আপলোড করতে সমস্যা হচ্ছিল। তা ঠিক করতে অনেক সময় নষ্ট হয়। তার পর অনেকেই ভয় ও আশঙ্কায় পিছিয়ে যান। অনেকেরই মনোভাব ছিল, আগে অন্যদের কোনও প্রতিক্রিয়া হচ্ছে কিনা দেখে তবে তাঁরা টিকা নেবেন। ফলে প্রথম দফায় লোক কম হয়।

Advertisement

আজ সোমবার ফের টিকাকরণ হবে। শনিবার রাত থেকেই সোমবারের জন্য প্রাপকদের সংখ্যা বাড়াতে ঝাঁপিয়ে পড়তে হয়েছে স্বাস্থ্যকর্তাদের। শনিবার অনেক রাত পর্যন্ত জেলার কর্তারা সমস্ত কেন্দ্রের নোডাল অফিসারদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করে একাধিক নির্দেশ দিয়েছেন। সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে প্রাপকদের কাউন্সেলিং করে রাজি করানোর বিষয়টির উপরে। রবিবার সকাল থেকে নোডাল অফিসারের পাশাপাশি হাসপাতালের কর্মীরা সম্ভাব্য প্রাপকদের তালিকা ধরে ফোন করতে শুরু করেছেন। তাঁদেরকে ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করেন।

জেলার একটি হাসপাতালের সুপার বলছেন, “ফোন করে কাউন্সেলিং করতে হচ্ছে অনেককেই। তার পরও পর পর দু’দিনের জন্য এক-একটি কেন্দ্রে ২০০ জনের তালিকা তৈরি করা কঠিন হয়ে পড়েছে।” যদিও জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, “প্রাথমিক ভয় ভেঙে কেউ- কেউ রাজি হচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে প্রথম দিন পিছিয়ে গিয়েছিলেন এমন লোকও আছেন।”

শনিবার একটা বড়় সমস্যা দেখা দিয়েছিল ভ্যাকসিন দেওয়া নিয়ে। একটা ভায়ালে দশটা করে ভ্যাকসিন থাকে। আর ভায়াল খোলার পর সেই ভ্যাকসিন কার্যকর থাকে চার ঘন্টা। এই চার ঘন্টার মধ্যে ১০টি ভ্যাকসিনই দিয়ে দিতে হবে। নয়তো যে ক’টি পড়়ে থাকবে সেগুলি নষ্ট হয়ে যাবে। শনিবার একাধিক কেন্দ্রে শেষ ভায়েলের জন্য দশ জন জোগাড়় না হওয়ায় বেশ কিছু ভ্যাকসিন নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আজ তার পুনরাবৃত্তি যাতে না-হয় তার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে হচ্ছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, “ সকলে কেন ভ্যাকসিন দিতে আসেননি সেটা তাঁরাই বলতে পারবেন। তবে আগামীতে যাতে করোনার টিকাকরণ পুরোপুরি সফল হয় তার জন্য সব রকম ভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন