শিক্ষকই নেই, ছাড়পত্র স্কুলকে

স্কুল আছে, আছে ক্লাশঘরও। কিন্তু নেই দরজা-জানালা, এমনকী বসার বেঞ্চও। ছাত্রদের হস্টেল রয়েছে, কিন্তু দূরদূরান্তের ছাত্রীদের কোনও হস্টেল নেই। এরই মধ্যে অলচিকি স্কুলটি দীর্ঘ টানাপোড়েনের পরে সপ্তাহ খানেক আগে মাধ্যমিকের অনুমোদন পেয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কল্যাণী শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৭ ০১:০৪
Share:

স্কুল আছে, আছে ক্লাশঘরও। কিন্তু নেই দরজা-জানালা, এমনকী বসার বেঞ্চও। ছাত্রদের হস্টেল রয়েছে, কিন্তু দূরদূরান্তের ছাত্রীদের কোনও হস্টেল নেই। এরই মধ্যে অলচিকি স্কুলটি দীর্ঘ টানাপোড়েনের পরে সপ্তাহ খানেক আগে মাধ্যমিকের অনুমোদন পেয়েছে। কিন্তু অলচিকিতে পড়ানোর শিক্ষকই নেই। আর শিক্ষক এলেই বা কী, পাঠ্যবই জোটেনি নবম শ্রেণির পড়ুয়াদের। এমন হাজারো নেই নিয়ে কল্যাণীর অলচিকি হরফের স্কুলটি কার্যত নেই-রাজ্য। স্কুল কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন জায়গায় দরবার করলেও সুফল মেলেনি।

Advertisement

কল্যাণীর পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের সিধু-কানু নগরের প্রাথমিক স্কুলটিকে অলচিকি মাধ্যমে পরিবর্তন করা হয়। ২০১৩ সালে স্কুলটিকে আপার প্রাইমারি বা উচ্চ প্রাথমিকে উন্নীত করা হয়। হরিণঘাটার একটি জনসভা থেকে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নতুন বিদ্যালয় ভবনের উদ্বোধনও করে দেন। যদিও তখনও পর্যন্ত স্কুলের ভিতই গাঁথা হয়নি।

রাজ্যে আর কোথাও অলচিকি লিপির আবাসিক স্কুল নেই। সরকারের উদ্দেশ্য ছিল রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাঁওতাল পড়ুয়ারা এখানে থেকে পড়াশোনা করতে পারবেন। কিন্তু শুরু থেকেই বিপত্তি সঙ্গি এই স্কুলটির। হস্টেল তৈরি না হওয়ায় বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পড়ুয়াদের চরম সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। খাওয়া-পড়া-ঘুম— সবই চলত ক্লাশঘরেই। বছর খানেক আগে ছাত্রদের হস্টেল তৈরি হয়েছে। ছাত্রীদের হস্টেল আজও তৈরি হয়নি। ফলে কল্যাণী পুরসভার কমিউনিটি হলে কোনওরকনে দিন গুজরান হয় তাঁদের। স্কুলের পাশে হস্টেল তৈরি হলে তাঁদের সুবিধা হয় বলে জানিয়েছে ছাত্রীরা।

Advertisement

স্কুল বিল্ডিং একটা তৈরি হয়েছে ঠিকই। কিন্তু, ক্লাশঘরগুলিতে না আছে দরজা-জানালা, না আছে বেঞ্চ। ফলে মেঝেতে বসেই পড়াশোনা চালাতে হয় তাঁদের। প্রথম তিন বছর মাত্র একজন শিক্ষক দিয়েই স্কুল চলেছে। যদিও তিনি বাংলা মাধ্যম স্কুলের শিক্ষক ছিলেন। মাস চারেক আগে অলচিকি জানা দু’জন শিক্ষক মিলেছে। মাত্র তিন জন শিক্ষক দিয়ে যে স্কুল চালানো সম্ভব নয়, তা স্বীকার করছেন শিক্ষকরাও।

স্কুল পরিচালন কমিটির সদস্য রাইমনি মুর্মু বলেন, ‘’দার্জিলিং, মালদহ, হুগলি, বাঁকুড়া-সহ বিভিন্ন জেলা থেকে প্রায় ৪০ জন ছাত্রী এই স্কুলে ভর্তি হয়েছেন। কিন্তু হস্টেল তৈরি না হওয়ায় আমরা চরম সমস্যায় পড়েছি। শিক্ষক, পাঠ্য বই-সহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে জেলা প্রশাসনের সব স্তরেই জানিয়েছি। এই মুহূর্তে আরও পাঁচ জন শিক্ষক দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে স্কুলশিক্ষা দফতর। ‘’

জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) মিতালি দত্ত জানান, ‘’পাঠ্য বইয়ের জন্য নির্দিষ্ট জায়গায় জানানো হয়েছে। সেখান থেকে বই এলেই ওদের দেওয়া হবে। ওদের আর কী কী সমস্যা রয়েছে, তা আমাকে জানালে আমি ব্যবস্থা করব।’’ রাইমনি অবশ্য জানিয়েছেন, সব আবেদনপত্রই জেলা স্কুল পরিদর্শকের অফিসে জমা দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন