নিজেদের কোম্পানি গড়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছেন মুর্শিদাবাদের প্রান্তিক চাষিরা। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প রাষ্ট্রীয় কৃষি বিকাশ যোজনায় এক হাজার চাষিকে নিয়ে ওই সংস্থা গড়া হয়েছে। তাতে প্রত্যেক চাষির এক হাজার টাকার শেয়ার রয়েছে। লাভের ভাগ তো বটেই, তা ছাড়াও কম দামে বীজ, কীটনাশক ও চাষের উপযোগী জিনিসপত্র সস্তায় পাচ্ছেন তাঁরা। চাষিদের উৎপাদিত শস্য কিনে তাঁদেরই সংস্থা ব্যবসা করছে।
জেলা উদ্যান পালন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এলাকার চিহ্নিত করে প্রথমে ‘ফার্মারস ইন্টারেস্ট গ্রুপ’ তৈরি করা হয়। পরে ওই গ্রুপগুলিকে নিয়ে কোম্পানি গড়া হয়। শেয়ার হোল্ডারেরা এক হাজার করে টাকা জমা দেন। তাতে দশ লক্ষ টাকা জমা হয়। সরকারও সমপরিমাণ টাকা দেয় সংস্থাকে। ফলে গোড়ায় বিশ লক্ষ টাকা মূলধন নিয়ে যাত্রা শুরু হয়। সব চাষি ওই মূলধনের সমান অংশী, ফলে লাভেরও তাঁর সমান অংশীদার।
জেলা উদ্যানপালন আধিকারিক গৌতম রায় জানান, গত তিন বছরে ছোট চাষিদের নিয়ে বেলডাঙা-নওদা, ভগবানগোলা এবং মুর্শিদাবাদে একটি করে অ্যাগ্রো প্রোডিউসার কোম্পানি গড়া হয়েছে। এ বছর হরিহরপাড়া ও কান্দিতেও একটি করে সংস্থা হচ্ছে।
বেলডাঙা ১ ব্লকের খিদিরপুরের চাষি তথা তথা সেখানকার সংস্থার সম্পাদক সুদেব মণ্ডল জানান, ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে তাঁরা ১০০২ জন চাষিকে নিয়ে কোম্পানি গড়েন। তাঁরা পেঁপের চারা তৈরি করে চাষিদের কম দামে বিক্রি করেছেন। দিয়েছেন আলু বীজও। এ বার কিছু এলাকা থেকে ৩০ হাজার পিস লিচু কিনে দুবাইয়ে রফতানি করে লাভও করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আগামী দিনে চাষিদের উৎপাদিত সব্জি কলকাতার বাজারে বিক্রির পরিকল্পনা রয়েছে। কলকাতার কিছু সংস্থার সঙ্গে কথাও হয়েছে।’’
মুর্শিদাবাদের সংস্থার সম্পাদক, শশীধরপুরের সামাদ শেখ জানান, তাঁরা মূলত ধান, পাট, পেঁয়াজ বীজ ব্যবসা করেন। কম দামে চাষিদের ওই বীজ দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘‘এক সময় চাষিদের উৎপাদিত সব্জি নিয়ে কলকাতার বাজারে বিক্রি করেছি। মাঝে তা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ফের তা শুরু করার পরিকল্পনা নিয়েছি।’’