থানায় নেতারা, শঙ্কর বেপাত্তাই

গত বুধবার ভোরে মহাদেবপুরে ওই দু’জনের বাড়িতে গিয়ে গাঁজার কারবার স্বচক্ষে দেখে আসা গিয়েছিল। শঙ্কর দাবি করেছিলেন, সকলের সঙ্গে মিলেমিশেই কারবার চালাতে হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নগরউখড়া শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৯ ০১:৫৪
Share:

গাঁজার কারবারের কথা জানাজানি হওয়ায় আপাতত শ্রীঘরে চালান হয়েছেন হরিণঘাটার মহাদেবপুরে মিলন চাকী ওরফে মেরু। কিন্তু আর এক কারবারি শঙ্কর পাল বেপাত্তা।

Advertisement

গত বুধবার ভোরে মহাদেবপুরে ওই দু’জনের বাড়িতে গিয়ে গাঁজার কারবার স্বচক্ষে দেখে আসা গিয়েছিল। শঙ্কর দাবি করেছিলেন, সকলের সঙ্গে মিলেমিশেই কারবার চালাতে হয়। কাউকে চটালেই বিপদ। এর আগে ভৈরবী সরকার ওরফে কালোমাসি শাসকদলের নেতাদের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ার পরেই জেলে ঢুকেছিল।

শঙ্কর আর মেরুর কারবারের কথা ফাঁস হতেই এ নিয়ে রাজনীতিও শুরু হয়ে গিয়েছে। মেরু ধরার পড়েই বৃহস্পতিবার সকালে থানায় যান হরিণঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ তথা ব্লক তৃণমূল নেতা শঙ্কর দেবনাথ ও স্থানীয় তৃণমূল নেতা চিত্তরঞ্জন দাস। তাঁদের সঙ্গে দলীয় কর্মী-সমর্থকেরাও ছিলেন। থানা চত্বরে দাঁড়িয়ে গাঁজার কারবারি মেরুর বিরুদ্ধে স্লোগান দেন তাঁরা। মেরুর শাস্তি দাবি করেন। আধ ঘণ্টা স্লোগান ইত্যাদি চলার পরে তাঁরা ফিরে যান।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ তথা বিরোধীদের দলের কর্মীদের দাবি, শাসক দলের কোনও-কোনও নেতা বিষয়টি ভাল মতোই জানতেন। এখন ভোটের আগে পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে সামাল দিতে নেমেছেন। শুক্রবার হরিণঘাটা ব্লক তৃণমূল সভাপতি চঞ্চল দেবনাথ পাল্টা দাবি করেন, তিনিই যে নগরউখড়া বাজারে ভৈরবীর গাঁজার কারবার বন্ধ করিয়েছিলেন, সে কথা সকলেই জানে। পরে ভৈরবী বাড়িতে ব্যবসা শুরু করলে পুলিশকে তিনিই তা জানান।

ভৈরবী গ্রেফতার হওয়ার পরেই মেরুর উত্থান। চঞ্চলের দাবি, ‘‘মেরুর ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেওয়ার ভাবনা-চিন্তা চলছিল। তার আগেই তো সে গ্রেফতার হয়ে গিয়েছে।’’ শঙ্কর দাবি করেছিলেন, শাসকদলের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেই তাঁরা ব্যবসা চালান। সেই প্রসঙ্গে চঞ্চল বলেন, ‘‘ভাসা-ভাসা অভিযোগ করলে তো হবে না! নির্দিষ্ট করে কোনও নেতার কথা বললে তাঁকে আমি দল থেকে বহিষ্কার করব।’’

বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার স্বাস্থ্য সেলের নেতা কৃষ্ণ মাহাতোর কটাক্ষ, ‘‘ভোটের আগে শাসক দলের নেতারা নিজেদের ধোয়া তুলসী পাতা হিসেবে প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু ওদের ইন্ধন ছাড়া এ সব এত দিন চলতে পারে না!’’

বুধবার রাতে পুলিশ মেরুর বাড়িতে হানার দেওয়ার খবর পেয়েই শঙ্কর বাড়ি ছাড়েন। তবে মেরুর এক ঘনিষ্ঠের দাবি, তিনি হরিণঘাটা থানা এলাকাতেই নিকটাত্মীয়ের বাড়িতে গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছেন। যদিও রাত পর্যন্ত পুলিশ তাঁর নাগাল পায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন