ভরসা: হ্যারিকেনের আলোয় সারা হল পড়াশোনা। নিজস্ব চিত্র
প্রথম বৈশাখী ঝড়ে আঁধারে ডুবল নবদ্বীপ। রবিবার বিকেলে তার জেরে শহর জুড়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল বিদ্যুৎ সরবরাহ। সোমবার দুপুরেও যা স্বাভাবিক হয়নি।
ওই দিন, সন্ধ্যা ছা’টা নাগাদ বছরের প্রথম কালবৈশাখী ধাক্কায় ভেঙে পড়ে একাধিক বিদ্যুতের খুঁটি। বহু জায়গায় বিদ্যুতের তারে গাছ ভেঙে পড়ে ছিঁড়ে যায় বিদ্যুৎবাহী তার। অনেক জায়গায় ঝড়ের দাপটে তছনছ হয়ে যায় গৃহস্থবাড়ির ‘সার্ভিস কানেকশন’ও। গোটা শহর ডুবে যায় অন্ধকারে। নবদ্বীপ ষ্টেট জেনারেল হাসপাতাল থেকে শুরু করে শ্মশানের বৈদ্যুতিক চুল্লি— সর্বত্রই বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ সরবরাহ। ঘণ্টা খানেক পরে ঝড় বৃষ্টি থেমে গেলেও বিদ্যুৎ আর পেরেনি। ফলে ছুটির দিন, সন্ধ্যা থেকে শহরের ব্যবসা-বাণিজ্য শিকেয় ওঠে। হাসপাতালে সারা রাত জেনারেটরের সাহায্যে চালু রাখা হয় জরুরি পরিষেবা। আঁধারে সমস্যায় পরে পুলিশও। নবদ্বীপ রেল গেটে ট্রেন থমকে যাওয়ায় গৌরাঙ্গ সেতু রুটে দীর্ঘ য়ান জট সামলাতে নাজেহালে হয় পুলিশ। অন্ধকারে ডুবে যায় নবদ্বীপের মহাপ্রভু মন্দির। ইনভার্টার চালিয়ে সামান্য আলোয় কোনওরকমে রাত্রিকালীন সেবার কাজটুকু চালানোর ব্যবস্থা করা হয়।
রবিবার ছিল বিয়ের দিন। প্রবল ঝড়ের পর শহর জোড়া অন্ধকারে দুর্ভোগে পড়েন বিয়েবাড়ির কর্তারা। সারারাত বিদ্যুৎহীন কাটানোর পরে ভোর চারটে নাগাদ বিদ্যুৎ ফেরে কয়েকটি এলাকায়। তবে, নবদ্বীপের বিস্তীর্ণ এলাকা থখনও ডুবে ছিল আঁধারে।
বেলা বাড়তেই বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা জড়ো হতে থাকেন বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার অফিসে। বিদ্যুৎ না থাকায় জলেরও আকা? শুরু হয় শহর জুড়ে। অচল হয়ে পরে মোবাইল পরিষেবাও। অভিযোগ, বিদ্যুৎ দফতরে যোগাযোগ করলে তাঁদের শুনতে হয়— কাজ চলছে।
নবদ্বীপ বিদ্যুৎ বণ্টন কেন্দ্রের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার অমিতকুমার বসাক জানান, রবিবারের ঝড়ের সময় নবদ্বীপের মূল বিদ্যুৎ সরবরাহকারী ৩৩ কেভি লাইনটি বসে যাওয়ায় সারা রাত শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। ওই লাইনেই নদিয়ার ভাতজংলা থেকে বিদ্যুৎ সরবারহ হয় নবদ্বীপ সাবষ্টেশনে। ভোরের দিকে সেটি ঠিক হলে নবদ্বীপে বিদ্যুৎ ফিরতে শুরু করে। যদিও শহরের অধিকাংশ অংশে বিদ্যুৎ ফিরতে সোমবার দুপুর গড়িয়ে যায়।