ন্যায্য মূল্যে মেলে না সব

বন্ধ দোকানপাট, রাতে নেই ওষুধ

ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান আছে, কিন্তু সে‌খানে সব ওষুধ নেই। অথচ হাসপাতালের বাইরে আগে যে বেসরকারি দোকান খোলা থাকত, ন্যায্য মূল্যের দোকান খোলার পরে তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

কল্লোল প্রামাণিক ও সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়

করিমপুর ও নওদা শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৭ ০২:২৩
Share:

ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান আছে, কিন্তু সে‌খানে সব ওষুধ নেই। অথচ হাসপাতালের বাইরে আগে যে বেসরকারি দোকান খোলা থাকত, ন্যায্য মূল্যের দোকান খোলার পরে তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে রাতে রোগীর পরিজনেরা পড়ে যাচ্ছেন আতান্তরে।

Advertisement

কোনও একটা এলাকা নয়, এই পরিস্থিতি দুই জেলার বহু জায়গাতেই।

দিন পনেরো আগে করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন হোগলবেড়িয়া থানার দুর্লভপুরের মিঠু বিশ্বাস। সকালে সেখানেই তাঁর সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। গভীর রাতে কান্নাকাটি শুরু করে সদ্যোজাত। কর্তব্যরত চিকিৎসক একটি ওষুধ লিখে দেন। মিঠুর মায়ের আক্ষেপ, হাসপাতাল লাগোয়া ন্যায্য মূল্যের দোকানে ওই ওষুধ ছিল না। বাইরে বাজারে সব দোকান বন্ধ। পরে স্থানীয় এক জনকে ফোন করে একটি ওষুধের দোকান খোলানো হয়।

Advertisement

নওদার আমতলা গ্রামীণ হাসপাতালে ৫০ জন রোগীর থাকার ব্যবস্থা আছে। কিন্তু সেখানেও রাতের বেলায় একই অভিজ্ঞতা রোগীর বন্ধু বা আত্মীয়দের। জানুয়ারির গোড়ার দিকে এক রাতে তাদের তিন রোগীর ওষুধের প্রয়োজন হয়েছিল। কিন্তু হাসপাতালের বাইরের সব ওষুধের দোকান তাঁরা বন্ধই পান।

দুর্ভোগে পড়েছিলেন মুরুটিয়ার আসগর মণ্ডলও। করিমপুরের চিন্ময় বিশ্বাস বলেন, “বছর তিনেক আগেও এই সমস্যা ছিল না। হাসপাতালের বাইরে একটি ওষুধের দোকান সারা রাত খোলা থাকত। এখন আর থাকে না। ন্যায্য মূল্যের দোকান চব্বিশ ঘণ্টা খোলা থাকলেও সেখানে সব ওষুধ পাওয়া যায় না” তেহট্ট হাসপাতালে গিয়ে একই বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা দীপঙ্কর রায়ও।

কেন এই পরিস্থিতি তৈরি হল?

এক ওষুধ ব্যবসায়ীর ব্যাখ্যা, রাতে এমনিতে বিক্রিবাটা কম থাকে। আগে যা-ও বা হত, ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান চালু হওয়ায় তা অনেক কমে গিয়েছে। রাতে দোকান খুলে রাখতে এক জন কর্মচারীকে অন্তত দু’শো টাকা দিতে হয়। কিন্তু সারা রাতে কখনও পঞ্চাশ টাকার ওষুধ বিক্রি হচ্ছে, কখনও আবার আদৌ হচ্ছে না। সেই কারণে রাতে পালা করে দোকান খোলা রাখা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালের সুপার রাজীব ঘোষ অবশ্য দাবি করছেন, চিকিৎসকেরা রোগীদের যা ওষুধ দেন, তা ন্যায্য মূল্যের দোকানে পাওয়া যায়। হাসপাতাল থেকেও ওষুধ দেওয়া হয়।’’

সমস্যার সমাধানের জন্য সদ্য নতুন একটি ব্যবস্থা চালু হয়েছে নওদা হাসপাতালে। স্থানীয় এক সংগঠনের দু’মাসের চেষ্টার পরে গত ১২ মার্চ থেকে একটি করে ওষুধের দোকান খোলা থাকছে। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ও প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে ওই দোকানিরা বলেছিলেন, রাতে দোকান খুললে ড্রাগ কন্ট্রোল যাতে রুষ্ট না হয়, তা দেখতে হবে। নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করতে হবে। পুলিশ-প্রশাসন আশ্বাস দেওয়ার পরে ন’টি দোকান পালা করে রাতে খোলা থাকছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন